শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে

প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ভালোবাসা জরুরী কিন্তু কখনও কখনও ওই সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলাও অনিবার্য হয়ে পড়ে। সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলার পর মানুষ খুবই স্পর্শকাতর সময় পার করে। চৌকষভাবে ও বুদ্ধিমত্তার সাথে এই স্পর্শকাতর সময়গুলো পার করতে পারলে ভবিষ্যৎ আরও সুখের হতে পারে। আর তা না হলে আশঙ্কা থাকে, আপনি জড়িয়ে যাবেন আরও কতগুলো ব্যর্থ সম্পর্কের বেড়াজালে।

একটি সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পর আরও কতগুলো ব্যর্থ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে রক্ষা পেতে কতগুলো সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। নতুনদিনের পাঠকদের জন্য এমন কিছু কাজের তালিকা দেওয়া হলো, যা বিচ্ছেদের পরে প্রেমিক-প্রেমিকাদের করা উচিত নয়।

তড়িঘড়ি করে সম্পর্ক ভাঙ্গার কথা প্রকাশ করে ফেলা:

অনেকে সম্পর্কের শুরুতেই কিংবা বিচ্ছেদের সাথে সাথে হুট করে ফেসবুকে নিজের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পাল্টে ফেলেন। এদের ক্ষেত্রে সম্পর্ক গড়তে কিংবা ভাঙ্গতে যতটানা সময় লাগে তারচেয়েও কম সময় লাগে প্রকাশ্যে বলতে। সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার কথা নিকটজনদের কাছে প্রকাশ করার আগে সময় নেওয়া উচিত। সম্পর্ক ভাঙ্গা বা বিচ্ছেদের বিষয়ে ভাল করে ভাবুন। খুব নিশ্চিত হলেই কেবল প্রকাশ করুন। একইভাবে নতুন সম্পর্কে জড়ানর পরও বুঝতে চেষ্টা করুন আসলে সম্পর্কটি কতটুকু আস্থায় নেওয়ার মতো হয়েছে। তারপর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পাল্টান কিংবা নিকটজনদের বলুন।

বিচ্ছেদের বেদনা এড়িয়ে যাওয়ার কিছু নাই:

অনেকেই বিচ্ছেদ বেদনা এড়িয়ে যেতে লম্বা ভ্রমণে বের হওয়ার কথা ভাবেন। কিন্তু বিচ্ছেদের বেদনা এড়িয়ে যাওয়ার কিছু নাই। অপেক্ষা করুন। মন শান্ত হয়ে এলেই কেবল ভ্রমণে বের হউন। দুঃখে ভ্রমণ কোনভাবেই উপভোগ্য হয় না। বিচ্ছেদের কয়েকমাস পর কষ্টের পরিমাণ কমলে, আবেগ স্থির হলে বেড়াতে যাওয়া উচিত। তাহলেই কেবল মনেও সতেজতা আসবে, ভ্রমণটাকে আরো অনেক বেশি উপভোগ করা যাবে।

প্রাক্তন সম্পর্ককে সম্মান করুন:

সম্পর্কে জড়ানর পর প্রেমিক-প্রেমিকারা নানান গোপন ও স্পর্শকাতর ভাব নিজেদের মধ্যে বিনিময় করেন। কথা হয় উভয়েরই দুর্বলতা নিয়ে। বিচ্ছেদের পরে এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে একে অপরকে অপমান করা থেকে বিরত থাকা উচিত। অপমানে শুধু যে আপনার প্রাক্তন বন্ধুটি ভুগবে তা নয়, আপনি নিজেও একসময় অপরাধবোধে ভুগবেন।

কোন বিষয়ে ব্যস্ত হবেন, ভেবে নিন:

বিচ্ছেদের পরে প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের ব্যস্ত রাখতে শুধুই ব্যায়াম কিংবা অন্যকোন শরীরচর্চার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলেও ভেবে দেখুন- শুধুই কি একটি ধরণের কাজ করেই আপনার সবটুকু সময় কাটিয়ে ফেলবেন?

সময় কাটানর ধরণ নিয়েও ভাবুন:

বিচ্ছেদের পর সময় কাটানকে সুখকর করতে অনেকে খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। কিন্তু প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিচ্ছেদের পর খরচের বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। মনে রাখা উচিত, অতিরিক্ত খরচের দায়ভার নিজেকেই বহন করতে হবে।

অন্যেরা সুখী কিন্তু ঈর্ষার কিছু নাই:

অনেকেই বিচ্ছেদের পরে কাছের মানুষদের ঈর্ষা করা শুরু করেন। বন্ধুদের সুখ দেখে, নিজের দুভার্গ্যের জন্য আফসোস করেন। ভালবাসা, সুখ, উত্তেজনা সকলেই চায়। এগুলো একটি সময়ে আপনার নাও থাকতে পারে। তবে তার জন্য আফসোস না করে ইতিবাচক হোন। ইতিবাচক মনোভাব ও আচরণ অব্যাহত থাকলে আপনার জীবনেও এগুলোর আগমন ঘটবে।

নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেবেন না:

বিচ্ছেদের পরে কখনোই ঘরে বসে থাকা উচিত না। বন্ধুদের এড়িয়ে চলা ঠিক না। ঘরের কোণে বসে না থেকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন। নিজের প্রতি যতœশীল হোন।

নতুন সম্পর্কের আগে সময় নিন, ভাবুন:

বিচ্ছেদের পরে মানসিক যন্ত্রণা দূর করতে অনেকেই তড়িঘড়ি করে নতুন প্রেমে পড়েন। যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন বোধ করে না। এক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়া ও সময় নেওয়া উচিত। নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন। সময় আসলে দেখবেন আপনি নিজেই বুঝবেন, কার সাথে নতুন করে সম্পর্ক করা উচিত।

নজরদারি বন্ধ করুন:

বিচ্ছেদের পরে প্রেমিক-প্রেমিকা অন্যের গতিবিধির উপর নজরদারি শুরু করেন। বিচ্ছেদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে ফেসুবকের প্রোফাইল চেক করেন। যা মানসিক যন্ত্রণাকে আরো বাড়িয়ে তোলে। বিচ্ছেদের পরে কোনভাবেই অন্যের উপর নজরদারি করা উচিত না।

অতীতকে এড়িয়ে চলুন:

অনেকেই বিচ্ছেদের পরেও সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকা ও তার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। যা এক ধরণের মানসিক অশান্তির জন্ম দেয়। ফলে, বিচ্ছেদের পরে সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকা ও তাদের বন্ধুদের এড়িয়ে চলাই ভাল।

নিজের দোষ বোঝার চেষ্টা না করা:

ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের দোষ স্বীকার করতে চান না। আশে-পাশের সবাইকে দোষারোপ করেন। যা মোটেও উচিত না। অন্যকে দোষ না দিয়ে নিজের দোষ বা ভুলগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। যা পরবর্তীতে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ সুবিধা দেবে।

অনুগ্রহ আদায়ের চেষ্টা থেকে বিরত থাকা:

অনেকেই আছেন বিচ্ছেদের পরে ‘বিচ্ছেদের গল্প’ করে নিজের প্রতি অন্যের অনুগ্রহ আদায়ের চেষ্টা করেন। এটা করলে নিজেকে অন্যের কাছে ছোট করা হয়। এছাড়া বারবার শোনার পরে অন্যরা বিরক্ত হতে পারেন। ফলে অন্যের সাথে বিচ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা না করে তাদের সময়ের মূল্য দিতে শিখুন।

মাদক ও অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন:

সম্পর্কের বেদনা ভুলতে অনেকেই মাদকের দ্বারস্থ হন। কেও বা মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া শুরু করেন। উভয়ই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিচ্ছেদ ঘটলেই মাদকের আশ্রয় নেওয়া কখনই বুদ্ধিমানের কাজ না।

‘না’ বলতে শিখুন:

বিচ্ছেদের পর নতুন সম্পর্ক তৈরী হবে খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রস্তাব পেলেই সম্পর্ক শুরু করতে হবে তা নয়। একারণেই ‘না’ বলতে পারা উচিত। অপেক্ষা করা উচিত আরও ভালো কোন বন্ধুর জন্য।