কালিয়াকৈর প্রতিনিধি ॥ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকায় চুরির অপবাদ দিয়ে ১০ বছর বয়সী এক কাজর মেয়ের উপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে আনসার সদস্য সহ ২জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- ময়মনসিংহের হালোয়াঘাট এলাকার গোলাম কিবরিয়া মিঠুর স্ত্রী সফিপুর আনসার একাডেমীর ২নং ক্যাম্প ব্যাটেলিয়নের সিপাহী শিল্পী আক্তার (২৮) ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বিশ্বাসপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মনসুর আলী (৩০)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সুত্র জানায়, কাজের মেয়ে শারমিন আক্তার গাইবান্ধার পান্তাপাড়া কুড়িপাইতা এলাকার শামসুল হকের মেয়ে। শামসুল হক স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার কালামপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। অভাবের তাড়নায় গত ১৯ দিন আগে মেয়েকে উপজেলার বিশ্বাসপড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের বাসার ভারাটে শিল্পী আক্তারের বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে নিযুক্ত করে। শারমিন আক্তার ওই বাসার সমস্ত কাজকর্মসহ তার দুই শিশু সন্তানদের দেখা শোনা করে আসছিল। গত ৬ ডিসেম্বর ওই বাসা থেকে কিছু স্বর্ণালংকার অপবাদে শারমিনকে মারধর ও গোপন অংগে স্যাকা দেয়। পরে গত ৯ ডিসেম্বর রাতে শিল্পী আক্তার এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মনসুর আলীকে দিয়ে তাকে শারিরিক নির্যাতন চালায়। শারমিনের আহাজারি শুনে আশপাশের লোকজন পুলিশকে খবর দিলে মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শারমিন কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ সময় নির্যাতনকারী আনসার সদস্য গৃহকর্তী শিল্পী ও মনসুর আলীকে আটক করা হয়।
এব্যাপারে নির্যাতিত শারমিন জানান, আমি চুরি করিনি। তবু আন্টি ও মনসুর কাকা আমার পেটে পাড়া দিয়ে গলায় ছুরি ধরে একটি কঞ্চি দিয়ে পিটিয়েছে। পরে আমার গোপন অংগে গরম ডিম দিয়ে স্যাকা দিয়েছে। আবার রাতে আমার মাকে ডেকে এনে তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমাকে তিনদিন ধরে আটক করে নানা ভাবে অত্যাচার করেছে।
এব্যাপারে শিল্পী আক্তার জানান, আমার স্বর্নের গহনা হারানো গেছে। তাকে মারধর করা হয়নি শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক(এসআই) সৈয়দ আজহারুল ইসলাম জানান, এঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তবে শারমিনের পায়ে, পিঠে, হাতে ও মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে।