স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবরোধের নামে বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের নাশকতা রুখতে ঢাকাসহ সারাদেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। অবরোধের তৃতীয় দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেসনোটে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের দ্বিতীয় দফায় ৭২ ঘণ্টা সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধের তৃতীয় দিনে সোমবার সারাদেশে বিএনপি, ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবির কর্মীরা জনসাধারণের মাঝে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতা ও তাৎক্ষণিক তৎপরতায় তাদের সে অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
উল্লেখ্য যে অবরোধের নামে নাশকতার হাত থেকে সরকারি সম্পদ ও জনসাধারণের জানমাল রক্ষার্থে সরকার রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
সারাদেশে তৃতীয় দিনের অবরোধ চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরের আকবর শাহ্ মাজারের পাশে পাহাড়িকা পেট্রোল পাম্পের সামনে অবরোধকারীদের ছোঁড়া ককটেলের আঘাতে ক্যাব ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডার গার্টেন স্কুলের নার্সারী শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার গুরুতর আহত হন।
নাটোর জেলা শহরে অবরোধ বিরোধী জনতা ও ১৮ দলের নেতা কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সুজন নামে একজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও থানাধীন হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজের সামনে অবরোধকারীদের ছোঁড়া ককটেলের আঘাতে রিক্সাচালক জাহাঙ্গীর আলম আহত হন।
নওগাঁ জেলার রাণীনগর থানার সীমান্তে ভাঙ্গাপাড়া নামক স্থানে অবরোধ সমর্থক বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা রেল লাইনের ফিশপ্লেট ও প্যান্ডেল ক্লিপ খুলে ফেলে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রেল বিভাগের সহায়তায় রেল লাইনের মেরামত কাজ সম্পন্ন করে।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানাধীন হেমনগর ও শহিদনগর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে রেল লাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলায় বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-তারাকান্দি লাইনে রেল চলাচল বন্ধ আছে।
রেল বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় দ্রুততার সঙ্গে মেরামত করে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব ও চলাচলের সুবিধার্থে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে।
কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ব্যতীত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক ও তৎপর থাকায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আর কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এছাড়া কয়েকটি স্থানে হিংসাত্মক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে অবরোধকারীদের প্রতিরোধ ও ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।
অবরোধের সময় দূরপাল্লার বাস চলাচলে অসুবিধা হলেও রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে বিমান, ট্রেন, লঞ্চ এবং ব্যাংক-বীমা, অফিস-আদালতসহ জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক ছিল।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল, সরকারি সম্পদ ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি, অর্থনীতি ধ্বংস ও দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে যারা বিক্ষিপ্তভাবে সহিংস ও ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে তদন্ত পূর্বক দ্রুত সেসব দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
