সোমবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ , ৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > র‌্যাম্প মডেলরা পতিতা নয়, ওরা বাধ্য হয়েৃ

র‌্যাম্প মডেলরা পতিতা নয়, ওরা বাধ্য হয়েৃ

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ : মেয়েদের ক্ষেত্রে র‌্যাম্প মডেল হওয়ার জন্য যে গুন থাকতে হবে সেগুলো হলোঃ

১) হাইট – মিনিমাম ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির উপরে হতে হবে

২) ফিগার স্লিম হতে হবে

৩) চেহেরা দেখতে সুন্দর ও এট্রাকটিভ হতে হবে । ৫০০ মেয়ের মধ্য থেকে বুঝা যেতে হবে সে একজন একজন মডেল।

৪) মেয়েটির এক্সপ্রেশান এবং লুক এট্রাকটিভ/ হট হতে হবে।

৫) ক্যাট ওয়াক জানতে হবে।স্লিম না হলেও বাকি চার গুণ থাকলে র‌্যাম্প মডেল হতে পারবে

চারটি গুণ যাদের মধ্যে আছে তারাই শুধু ভালো মডেল হতে পারবে। এই ৫ টা গুন পৃথিবীর কত ভগ মানুষের আছে ? গুন গুলো যাদের আছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ র‌্যাম্প মডেলিং পেশা হিসেবে নির্বাচন করে। প্রথম ৪-৫ টা শো শখে করলেও এক্সপার্ট হয়ে যাওয়ার (এক্সপার্ট হওয়া মানে মিউজিক ক্যাচ করা , বিটের তালে তালে হাটা এক কথায় কোন ভুল না করা ) একজন মডেল প্রফেশানাল হয়ে যায়। তখন সে টাকার বিনিময়ে র‌্যাম্পে হাটে। মডেলদের মধ্যে ক্লাস আছে । যারা ভালো নাম করা মডেল তাদের পেমেন্ট ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ( ২ টি বা ৩ টি গানের সাথে হাটলে ) আর একটু মিডিয়াম গুলো যারা তেমন নাম করতে পারেনি ২ থেকে ৪ হাজার টাকা এবং নতুন যারা আসে তারা ১ থেকে ২ হাজার টাকা।

জীবনে ৩ বার এই জনপ্রিয় মডেলের সাথে একই স্টেজে হাটার সৌভাগ্য হয় । ৫-৭ বছর আগের সে র‌্যাম্প মডেল ও অভিনেত্রী দিলরুবা ইয়াসমীন রুহী এখন ভীষণ ব্যস্ত। র‌্যাম্পের পর টিভি নাটকে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি। প্রবাসী পরিচালক মনসুর আলীর ‘সংগ্রাম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সিনে-পর্দায় অভিষেক হতে চলেছে তার। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ইসমত আরা চৌধুরী শান্তির ‘মায়ানগর’ চলচ্চিত্রে। ভারতের কলকাতার দুটি চলচ্চিত্রেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চলচ্চিত্রের ব্যস্ততা সামলে রুহী র‌্যাম্প মডেলদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলছেন।

এই রুহি আপু আমার গুরু । রুহি আপুর সাথে একটা স্মৃতির কথা শেয়ার করি আপনাদের সাথে। একবার একটা শোতে আপুর সাথে একই স্টেজে হাটতে গিয়ে আমার জুতার ফিতা ছিড়ে গিয়েছিল। এ মেধাবী মডেল তখন আমাকে ইশারা করে আমার পায়ের বৃদ্ধ আঙ্গুলের দিকে ইশারা করেন। আমি বুঝতে পারি আমাকে আঙ্গুলের উপর ভর করে মোভ করতে হবে । হটাত করে জুতার ফিতা ছিড়ে যাওয়া মানে আমার কী অবস্থা না দেখলে বুঝাবেন না। সেদিন আপুর কাছে শিখেছিলাম হাটার মাঝে জুতার হিল ভেঙ্গে গেলে ও জুতার ফিতা ছিড়ে গেলে অপ্রস্তুত না হয়ে কী করে আঙ্গুল দিয়ে হাটা শেষ করতে হয়। হেটে না দেখালে বুঝবেননা এটা কত কষ্টের। ছেড়া জুতা পরা অবস্থায় আঙ্গুলের উপর ভর করে ক্যাটওয়াক করা খুব কঠিন কাজ। সেদিনের রুহী আপু এখন স্টার । শত শত মডেলের শিক্ষক ।

একজন রুহী হয়ত সবকিছু জয় করে সফল হয় কিন্তু হাজার হাজার রুহীকে প্রতিভা থাকা সত্বেও তার ইচ্ছা / স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে হয়। আমার বাবাকে একজন মাতব্বর টাইপ লোক একদিন অপমান করে বলেছিলো আপনার মেয়ে নাকি কী শরীর দেখাইয়া হেটে টাকা পয়সা ইনকাম করে । বাবা সেদিন ওই লোকটাকে বলেছিলো হ্যা নেয় তো তাতে আপনার সমস্যা কী ? লোকটি বলেছিলো আমার কোন সমস্যা নেই তবে লোকে তো ****** বলে । ****** এই জায়গায় লোকে কী কী বলে আপনারা অনুমান করে নেন। কারণ আপনারাও একই কথা বলেন মডেলদের নিয়ে। আমার বাবা সেদিনের পর থেকে আমাকে আর কখনো র‌্যাম্পে হাটতে দেননি। দিবে কেন? একজন ভদ্র মানুষকে তার মেয়ের জন্য মানুষে এ ধরনের কথা বলছে সেটা মেনে নিতে পারে কোন বাবা ?

যারা র‌্যাম্পে হাটে তাদের পতিতা বলা হয় আর যারা র‌্যাম্প মডেলদের শরীর উপভোগ করে তারা সুশীল। এই সুশীলরাই মডেলদের নাম্বার সংগ্রহ করে কী করে তা এখানে না বললেও আপনরা বুঝে নিতে পারবেন।

আমার ও স্বপ্ন ছিলো একজন রুহী আপু হব। তিনি আমার র‌্যাম্পের গুরু। সেদিনের সে মাতব্বর ও সুশীল সমাজ মধ্যভিত্ত পরিবারের এই মেয়েটির স্বপ্নকে গলা টিপে হত্যা করেছিলো? এ সুশীল মাতব্বরদের জন্য কত মেধা কত প্রতিভা অকালে ঝড়ে যাচ্ছে ?

মূল কথাঃ র‌্যাম্প মডেলদের বাধ্য করা হয় শরীর প্রদর্শন করতে। যদি কেও শরীর দেখাতে আপত্তি করে তাকে শো থেকে বাদ দেওয়া হয় । একটি মেয়ে সপ্ন নিয়ে র‌্যাম্প দুনিয়ায় আসে। সবার স্বপ্ন থাকে একদিন রুমা/ রুহী/ ইমী আপু হবে। কেউ বাঁধা ডিংগিয়ে রুহী রুমা হতে পারে বটে আবার অনেককে থেমে যেতে হয় সেসব মোড়লদের জন্য। বিশেষ করে রক্ষণশীল মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের জন্য খুব কঠিন প্রতিকূলতা জয় করা। একজন র‌্যাম্প মডেল বাধ্য হয়ে শরীর দেখায়। করিওগ্রাফার এবং শো অরগানাইজার বাধ্য করে একজন মডেলকে শরীর দেখাতে।এই মডেলদের দিয়ে তারা কোটি কোটি টাকাড় বিজনেস করে প্রতি শোতে। মডেলদে দেখিয়ে আয়োজকরা লক্ষ লক্ষ টাকা স্পন্সর নেন। শো গুলোতে ভাড়া করে আনা হয় পার্টি গার্ল। এই পার্টি গার্লদের নিয়ে ও বিদেশী মদের বোতল নিয়ে সারা রাত ফূর্তি করে। পরের দিন সকাল বেলা তারাই হয়ে উঠে সুশীল। এ সুশীলরা মডেলরা শরীর না দেখালে টাকা দিয়ে টিকেট কিনেনা। স্পন্সর করেনা। মডেল পন্য নয়। মডেলকে পন্য বানানো হয়। যদি কেউ আপত্তি করে তাকে বাদ দিয়ে অন্য মডেলকে নেওয়া হয়। সব দোষ ওই মডেলের । যারা মডেলদের পন্য বানিয়ে শরীর দেখাতে বাধ্য করে তাদেরকে কোন অপবাদ দেওয়া হয়না।

রুহী আপুর করিওগ্রাফি করা ও আমার পারফর্ম করা একটা ফ্যাশান শো এর ভিডিও আপলোড করতে চাচ্ছিলাম কিন্তু ভিডিও আপলোড করার সিস্টেম জানিনা। কেউ জানলে সিস্টেম জানাবেন।