২৫ নভেম্বর টিকফায় স্বাক্ষর

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ বহুল আলোচিত টিকফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে সরকার। ২৫ নভেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট বা টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সমালোচকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যেই আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এই চুক্তি করছে। বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মার্কিন উপ বাণিজ্য প্রতিনিধি উইন্ডি কাটলার এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন বলে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এই চুক্তি স্বাক্ষরের পর একই দিনে টিকফা নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ফোরামের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। চুক্তির শর্ত পূরণের বিষয় নিয়ে বছরে কমপক্ষে একবার উভয়পক্ষের ফোরাম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আগামী ২৩ নভেম্বর ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করাই টিকফা চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রামীণ ব্যাংক ও এর প্রতিষ্ঠাতা ড.মুহাম্মদ ইউনুস ইস্যুতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে তার অবসান ঘটাতেই সরকার এই চুক্তি করতে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, টিকফা চুক্তিতে স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের আগে বানিজ্য সচিব এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি সবাইকে অবহিত করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দীর্ঘদিন আলোচনা করেই আমরা এই চুক্তি করতে যাচ্ছি। এরফলে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। তিনি বলেন, এই চুক্তির ফলে অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। তিনি আকরামুল কাদের বলেন, এই চুক্তির পর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ফোরামের প্রথম বৈঠকে জিএসপি সুবিধার বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাধান্য পাবে।

গত জুন মাসে টিকফা চুক্তির খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৪০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক হওয়ায় এই চুক্তি দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো সহায়ক হবে এবং একই সাথে এই চুক্তি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, টিকফার মতো বিতর্কিত বিষয়ে চুক্তি করার আগে বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হওয়া উচিত ছিল। অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, নির্বাচনের আগে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের সন্তুষ্ট করার জন্যই টিকফা চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, এই চ্ুিক্তর ফলে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্র¯ত্ম হবে। বিশেষকরে কৃষি ও শিল্পখাতে এর বিরুপ প্রভাব পড়বে। আনু মুহাম্মদ বলেন, আমেরিকার প্রধান ব্যবসায়ীক পার্টনার ভারত ও চীন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এই চুক্তি যদি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য সহায়ক হতো তাহলে তারা অবশ্যই এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতো। তাছাড়া এই চুক্তির এমন কোন দিক নেই যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫