রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > সুষ্ঠু নির্বাচন হলে লাখো ভোটের ব্যবধানে জিতবো: মান্নান

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে লাখো ভোটের ব্যবধানে জিতবো: মান্নান

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ১৮ দল-সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক এমএ মান্নান। তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে লাখো ভোটের ব্যবধানে আমি জয়ী হবো। গতকাল দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করে বলেন, আমার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রয়েছে, গাজীপুরবাসী আমার ওপরই আস্থা রাখবেন। নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের শুরু থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনবাসী আমার ডাকে বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছেন। কেন বিজয়ী হবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ১৯৯১-৯৬ পর্যন্ত গাজীপুর সদর আসনের এমপি ও মন্ত্রী ছিলাম। সে সময় আমি গাজীপুরে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়েছি। রাস্তাঘাট, গ্যাস, বিদ্যুতের উন্নয়ন করেছি। গাজীপুরবাসী এখনও তার সুফল ভোগ এবং আমার প্রশংসা করে। দীর্ঘদিন থেকেই গাজীপুরবাসীর সুখে-দুঃখে আমি পাশে দাঁড়িয়েছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নিবিড়। মান্নান বলেন, গাজীপুর দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত। সে বঞ্চনা থেকেই জনগণ এবার পরিবর্তন দেখতে চায়। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১৭ বছর মেয়র থাকাকালে টঙ্গিতে কোন উন্নতি করেননি। জলাবদ্ধতায় টঙ্গীর ৮০ ভাগ এলাকার মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়। এ ছাড়া স্থানীয় ও জাতীয় ইস্যু মিলিয়ে গাজীপুরবাসী সরকারকে একটি জবাব দেয়ার অপেক্ষা করছে। তারা চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তারা অব্যাহতভাবে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করছেন। তাদের আচরণ পুরোটাই বেপরোয়া। আজ পর্যন্ত আমাদের একটি অভিযোগকে আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন আমার সঙ্গে বৈরী আচরণ করছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণের ভোট জালিয়াতি করে ফল পাল্টানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মান্নান বলেন, গাজীপুরে সরকারদলীয় বহিরাগত নেতা ও অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছেন। তারা প্রশাসনিকভাবে প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করতে পারে। কিন্তু জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। যদি গাজীপুরে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার কোন চেষ্টা করা হয় তবে সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। গাজীপুরবাসী কোন অনিয়ম ও কারচুপিকে মেনে নেবে না। আন্দোলন, সংগ্রামের মাধ্যমে গাজীপুরকে অচল করে দেয়া হবে। মান্নান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ৬ই জুলাই নির্বাচন হলেও রিটার্নিং অফিসার পরদিন ৭ই জুলাই ১১টায় ফলাফল ঘোষণার কথা বলে চিঠি দিয়েছেন। আমরা এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। ফল পাল্টানোর জন্য এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফল ঘোষণা না করা পর্যন্ত গাজীপুরবাসী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ঘিরে রাখবে। নিজের বিরুদ্ধে প্রচারিত দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি কাদা ছোড়াছুড়িতে বিশ্বাস করি না। গাজীপুরবাসীর সাড়া না পেয়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অপপ্রচারকে হাতিয়ার করেছে। কিন্তু ভোটাররা সেগুলো বিশ্বাস করেনি। তবে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যে কতটা সৎলোক তা জনগণ প্রমাণ করে দেবে। পৌরসভার কাজের কোটি কোটি টাকা কোথায় গেছে নগরবাসী তা ভুলে যায়নি। মান্নান বলেন, কয়েক দিন ধরে গাজীপুরে বিপুল পরিমাণ কালোটাকা ছড়ানো হয়েছে। গরিব মানুষের মধ্যে টাকা বিতরণের মাধ্যমে ভোট কেনা হচ্ছে। কিন্তু সামান্য টাকার বিনিময়ে জনগণ তাদের মূল্যবান রায় কোন ব্যর্থ মানুষের হাতে তুলে দেবে না। সাধারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা নিজের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে না।
ফল পাল্টাতে সরকার বেপরোয়া
এদিকে গতকাল টঙ্গিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এম এ মান্নান অভিযোগ করে বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে সরকার বেপরোয়া আচরণ করছে। তিনি বলেন, গাজীপুরে নির্বাচন জালিয়াতির আশঙ্কা করছি। কারণ জেলার এমপি, সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা গোপন বৈঠক করছেন। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করছেন। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে গাজীপুরে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভিন্ন কেন্দ্রের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কয়েকজন নেতাকে নিয়ে সেখানেও গেছেন।
নির্বাচন কমিশনের অগ্রিম এ ঘোষণার মধ্যেই আমরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। কারণ রিটার্নিং কার্যালয়ের অফিস থেকে কোন কেন্দ্রের দূরত্বই ৪০ মিনিটের বেশি নয়। তাহলে কেন আগাম এ ঘোষণা? আমাদের দাবি, আগে মেয়রের ভোট গণনা ও পরে কাউন্সিলরদের ভোট গণনা করতে হবে। কেন্দ্র থেকে ফলাফল রিটার্নিং কার্যালয়ে পৌঁছার ১০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। যতক্ষণ ফল ঘোষণা করা হবে না, ততক্ষণ লোকজন রিটার্নিং কার্যালয় ঘিরে রাখবে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দায়ী থাকতে হবে। কোন ষড়যন্ত্র করে গাজীপুরবাসী তা মোকাবিলা করবে। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয় ও কোন ধরনের সমস্যা হয় তার দায়ভার সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। তিনি গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, গাজীপুরবাসী সুষ্ঠু নির্বাচনে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চায়। সঠিক পর্যবেক্ষণ ও সঠিত তথ্য প্রচার করে তারা গণতন্ত্রের স্বার্থে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবেন। এ সময় ১৮ দল-সমর্থিত প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাসান উদ্দিন সরকার, জাতীয় পার্টির নেতা আসাদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন সরকারসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
আমার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রয়েছে, গাজীপুরবাসী আমার ওপরই আস্থা রাখবেন। নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের শুরু থেকেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনবাসী আমার ডাকে বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছেন। গাজীপুর দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত। সে বঞ্চনা থেকেই জনগণ এবার পরিবর্তন দেখতে চায়। স্থানীয় ও জাতীয় ইস্যু মিলিয়ে গাজীপুরবাসী সরকারকে একটি জবাব দেয়ার অপেক্ষা করছে। তারা চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ। প্রফেসর মান্নান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি কয়েক লাখ ভোটের ব্যবধানে জিতবো। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তারা অব্যাহতভাবে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করছেন। তাদের আচরণ পুরোটাই বেপরোয়া। আজ পর্যন্ত আমাদের একটি অভিযোগকে আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণের ভোট জালিয়াতি করে ফল পাল্টানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, আমি কাদা ছোড়াছুড়িতে বিশ্বাস করি না। গাজীপুরবাসীর সাড়া না পেয়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অপপ্রচারকে হাতিয়ার করেছে। কিন্তু ভোটাররা সেগুলো বিশ্বাস করেনি।