প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের কারণে ,কমেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের কদর,ভালো নেই বাঁশমালীরা

ফজলুর রহমান, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) থেকে :

ছবি তুলে কি হবে। এর আগেও কয়েকজন সাংবাদিক এসে ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছিল। অনেক সময়ও চলে গেল, কোন সহযোগিতা পায়নি কখনো। হাট-বাজারে কমেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের কদর। কত কষ্টে আমাদের সময়টা কাটেছে তা কেউ জানেনা। এসব ছবি তুলে আমাদের জীবন বদলাবে না। বাঁশের পণ্য তৈরি করেই পুরো জীবন পার করতে হবে।

সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের রায়পাড়া এলাকায় বাঁশমালী দিপ্তী রাণীর বাঁশের পণ্য তৈরি করার ছবি তুলতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ওই এলাকার বাঁশমালী গোলাপ রায়ের স্ত্রী।

জানতে চাইলে দিপ্তী রাণী জানান, ওই এলাকার ৫০টি পরিবার বাঁশের তৈরি চাটাই, খাঁচা, বিটে, পলও, আন্টা, কুলা, পাখা, ডালি, ভাড়, ঝাড়ু, হাসঁ-মুরগি রাখা খাঁচাসহ নানা পণ্য তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্তমান সময়ে এসব জিনিস পত্রের দাম কম হওয়ায় পণ্য তৈরি পর বাজারে বিক্রি করে বেশি অর্থ পায় না তারা। ফলে খুব কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে তাঁদের।

৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা বাঁশমালী নিরলা রানী বলেন, আগে বাঁশের দাম কম ছিল। পাঁচশত টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরি করে দেড় হাজার টাকা বিক্রি করা যেত। কোন কোন সময় তার দুহাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন আর সেদিন নেই। বাঁশের দাম বাড়ার কারণে এখন পাঁচশত টাকার বাঁশ কিনে সেই বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরির পর ১ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না।

গোলাপ রায় বলেন, আমন ধান, আলু তোলার মৌসুমসহ বিভিন্ন ফসলাদি উত্তোলনের সময়গুলোতে ডালি, কুলা, ঝাড়ুসহ বিভিন্ন বাঁশের পণ্যের চাহিদা থাকে। এ সময় ব্যস্ততা থাকে আমাদের রায়পাড়ার ৫০টি পরিবারে। স্বামী-স্ত্রীর পাশাপাশি সন্তানদেরকেও এ কাজে সহযোগিতা করতে হয়। বাঁশের তৈরি পণ্য বিক্রি করেই ছেলে মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছেন গোলাপ রায়, তাঁর স্বপ্ন পড়ালেখা শেষ করে একটা চাকুরি হবে ছেলের। আমাদের পূর্ব পুরুষদের থেকে পাওয়া এ পেশা থেকে আমাদের মুক্তি দিবে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, পুর্ব পুরুষদের কাছে পাওয়া বংশ পরম্পরাই এ পেশায় গত ৫ বছরে আগে বেশ সফলতা ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বাজারে আসার কারণে কমে গেছে বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা। অন্যদিকে প্লাস্টিক পণ্যের দাম বাঁশের তৈরি পণ্যের চেয়ে অনেক কম।  ওই এলাকার বাঁশমালি খুদিরাম সাহা জানান, বাঁশের তৈরি পণ্য ছাড়া অন্য কোন কাজ জানা নেই। তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এটা করতে হচ্ছে। সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিলে এ এলাকার পরিবারগুলো আরও ভালো পণ্য তৈরি করে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫