বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের মন্ত্রী এমপিদের বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। করোনা প্রতিরোধে সরকারের কোনো যথাযথ পদক্ষেপ নেই মন্তব্য করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের মন্ত্রীরা এতদিন ধরে বলে আসছিলেন, করোনা প্রতিরোধে উন্নত দেশের চেয়ে ভালো ব্যবস্থা আছে বাংলাদেশে। কয়েকদিন আগে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গোয়েবলসীয় কায়দায় বলেছিলেন, করোনা নাকি বিএনপির অপপ্রচার।
গতকাল (শুক্রবার) ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘করোনা নিয়ে আতঙ্কের মতো পরিস্থিতি হয়নি, করোনার চেয়েও আমরা শক্তিশালী’। এই সমস্ত কথাবার্তা বৈশ্বিক বিপদের মুখে মানুষের সঙ্গে মশকরা করার শামিল। করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়ানক ভাইরাস আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ভাইরাসের কারণে গোটা দেশ, নির্বাচন ও দেশের মানুষ আজ বিপন্ন। এ কথাটিই প্রকারান্তরে ওবায়দুল কাদের বলে ফেলেছেন। সুতরাং লকডাউন বা শাটডাউন করে মহামারী করোনা সামাল দেয়া যাবে না। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে তা মোকাবিলা করতে হবে। অবিলম্বে জনগণের আশা ভরসার স্থল বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিন সেইসঙ্গে গরিব মানুষের ঋণের কিস্তি স্থগিত ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নাগালের মধ্যে রাখুন।
শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, গড়ে প্রতিদিন মাত্র ১৫-২০ জনের পরীক্ষা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে তিনশতাধিক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যে ১ হাজার ৭ শত টেস্টিং কিট ছিল তার মধ্যে অনেকগুলো খরচ হয়ে গেছে এয়ারপোর্টে নাটক করতে। বাকী যে কয়টা আছে, তা দিয়ে কি এমন হবে। হটলাইনের নামে এখন চলছে আইওয়াশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলো থেকে গত এক সপ্তাহেই প্রায় এক লাখ মানুষ দেশে এসেছেন এবং এর সঙ্গে তুলনা করলেও স্পষ্ট হচ্ছে যে, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা নগণ্য।
রিজভী বলেন, ‘চীনের উহান শহরে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস এখন সারাবিশ্বে মহামারী রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশেও ক্রমশ ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশজুড়ে মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক-উদ্বেগ। গত ৮ মার্চ থেকে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে, আর গতকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবে ২০। তবে মৃত্যু ও আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে অনেকে মনে করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)-এর পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক অতি মহামারি হিসেবে ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ তা প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ নিলেও বর্তমান মিডনাইট সরকার যথাসময়ে করোনা বিপর্যয়কে গুরুত্ব দেয়নি। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে। প্রায় দুই মাস সময় পেলেও সরকার এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপহীন থেকেছে। এই অবহেলা দেশের জনগণ মেনে নেবে না।