দেশে মুজিববর্ষের নামে লুটপাট চলছে : সুব্রত চৌধুরী

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
ব্রিটিশ এমপি রুপা হক ‘বাংলাদেশ দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ বলে ঠিকই করেছেন দাবি করে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, ‘রুপা হক তো মিথ্যা বলেননি। কিন্তু আওয়ামী লীগের খুব গোস্বা হয়েছে। আপনারা শুধু দুর্বৃত্ত না, আপনারা ডাকাত, আপনারা দস্যু। আবার মুজিববর্ষের নামে দেশে লুটপাট শুরু হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার ‘একুশ মানে অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণফোরাম।

এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নির্বাহী সভাপতি প্রফেসর আবু সাঈদ, সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হেলাল উদ্দিন, গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও প্রচার সম্পাদক খান সিদ্দিক।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, মুজিববর্ষ শুরু হয়েছে ছয় মাস আগে, আর এরা নাকি আরও ছয় মাস চালাবে। পৃথিবীর কোনো দেশের কোনো নেতার জন্মশতবার্ষিকী ছয় মাস আগে থেকে শুরু করে পুরো এক বছর এবং পরে আরও ছয় মাস কন্টিনিউ করে বলে জানা নেই। এসব করে কি বঙ্গবন্ধুকে ছোট করা হচ্ছে নাকি বড় করা হচ্ছে? কন্যা বলেই আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বঙ্গবন্ধুকে ছোট করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাড়ে সাত কোটির বাংলাদেশ এখন সাড়ে ১৬ কোটির বাংলাদেশ। যেখানে লুটপাট চলছে, সুশাসনের বালাই নেই, যেখানে মানুষের ভোটাধিকার নেই, যেখানে চলছে স্বৈরশাসন, ফ্যাসিবাদ। সবাই একযোগে বলবো, এটাই হাসিনার বাংলাদেশ। ভালো বেশ বেশ হাসিনার বাংলাদেশ। একুশ আজকে সেই জায়গায় নিয়ে গেছে তারা।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, বিজয় দিবসের পদক তারাই পাচ্ছে যারা দলবাজ হাসিনার পদলেহন করে। একটাই কথা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু হাসিনা। ব্যাস, তাহলে আপনি পুরোপুরি হাসিনার লোক হয়ে গেছেন। আপনার আর কিচ্ছু লাগবে না। যখন এই পর্যায়ে একটি দেশ চলে যায়, তখন আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা সাহিত্য-সংস্কৃতির লোক তারা আজ কোথায়? সেই দলবাজরা কোথায়? সেই বুদ্ধিজীবীরা, যারা হাসিনার পদতলে আশ্রয় নিয়েছে তারা আজ কোথায়? বাংলাদেশে হাসিনার ছায়া ছাড়া কি কোন সাহিত্য চর্চা হবে না? প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সন্তানদের পাঠাচ্ছি মানুষ হওয়ার জন্য, কিন্তু তারা বের হচ্ছে ছাগল হয়ে! কারণ কী? ওইসব প্রতিষ্ঠানে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর থেকে শুরু করে উচ্চপদে, সবই কিন্তু ওই মার্কার, নইলে আজ আমাদের কচুরিপানা খেতে হবে কেন? আসলে সবই হচ্ছে প্ল্যানমাফিক। যাতে কেউ কোনো কথা বলতে না পারে। গণফোরাম কথা বলে। সেটাই পছন্দ হয় না। ড. কামালকে নিয়ে নানা ধরনের আজগুবি কথাবার্তা হয়। কালকের ছেলে সংসদে দাঁড়িয়ে তথাকথিত সংসদ সদস্য কথা বলে!’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘রওশন এরশাদের মতো নির্লজ্জ বেহায়াও লজ্জা পাচ্ছে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) কারণে। তিনি নাকি সংসদে কচুরিপানা নিয়ে গিয়েছিলেন মন্ত্রীর জন্য, দেখেননি আপনারা?’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষমতায় যতদিন হাসিনা সরকার থাকবে, বাংলাদেশের মানুষের আর কিছু হবে না, আমাদের অন্ধ করে, বোবা বানিয়ে রাখবে। বলতে হবে আমাদের চোখ অন্ধ, আমরা কিছু দেখি না, কানে শুনি না। এভাবে একটা জাতিকে অন্ধ করে রাখা হবে। এখন আপনি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা শব্দকে সমর্থক করতে যাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনা। এটা বাড়াবাড়ি, এটা জাতি মানবে না।’

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসা খাতে দেখেন, চিকিৎসকরা দলবাজি করতে করতে আর কোনো সুচিকিৎসা নেই। বড়লোকরা তবু ভারতে চিকিৎসা নিচ্ছে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে, কিন্তু গরিবের কোনো চিকিৎসা নেই বাংলাদেশে। এমতাবস্থায় তিনি তামাশা করে ১০ টাকার টিকিট নিয়ে চোখের চিকিৎসা করেন, আর আমাদের সাংবাদিকরা বিরাট নিউজ করেন। পরদিন তিনি নিজের চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে চলে যাচ্ছেন। আমাদের রাষ্ট্রপতি চলে যাচ্ছেন চোখের চিকিৎসার জন্য। এখানে দেখানো হচ্ছে জনগণকে আমি ১০ টাকায় চোখের চিকিৎসা করছি। স্বৈরশাসন, ফ্যাসিবাদ স্বৈরতন্ত্রে যারা থাকে এটা তাদের চরিত্র। একুশের একমাত্র অঙ্গীকার হচ্ছে, দূর হ দুঃশাসন, দূর হ স্বৈরাচার, দূর হ ফ্যাসিবাদ।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
29  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫