ব্যারিস্টার সুমনকে জেরা

বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির যৌন হয়রানিসংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবী জেরা করেছেন।

মঙ্গলবার সাইবার ট্রাইব্যুনালে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আইনজীবী ফারুক আহমেদ এ সাক্ষীকে জেরা করেন।

বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন জেরা রেকর্ড করেন এবং তা শেষ হওয়ার পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণে রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম সহায়তা করেন। সাক্ষ্যগ্রহণকালে কারাগারে থাকা আসামি ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে কারা কর্তৃপক্ষ হাজির করেন।

আদালতসূত্র জানায়, ১৭ জুলাই আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতের চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। এর আগে ১৭ জুন মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ১৬ জুন হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার হন তিনি। ২৭ মে তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে তদন্ত সংস্থা। ওই দিনই আদালত তা আমলে নিয়ে আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রিমা সুলতানার দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ মার্চ বেলা ১টা ১৮ মিনিটে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন তার ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যবহার করে নুসরাত জাহান রাফির ভিডিও ধারণ, প্রচার ও তা ভাইরাল করেছেন। ওসি মোয়োজ্জেম হোসেন সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর সদস্য হয়েও নিয়মবহির্ভূতভাবে ভিকটিম নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানির ঘটনার বক্তব্য ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। ফলে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। এ সময় বোরকা পরিহিত কয়েকজন তাকে মাদ্রাসা ভবনের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানাতেই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে মামলা করেন।

রাফি ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। এর আগে রাফিকে যৌন হয়রানির মামলায় গ্রেফতার হয় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা।

ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ ওঠার পর ১০ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানা থেকে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর ছাগলনাইয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। সেখানে ঘুষ কেলেঙ্কারি, স্বর্ণ চুরি করে বিক্রি, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া, টোকেন দিয়ে নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা থেকে মাসোয়ারা আদায়, ভুয়া মামলা দিয়ে অর্থ আদায়, নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫