যে কারণে নতুন বিবাদে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন মিত্র কুর্দি যোদ্ধাদের ভাগ্য নিয়ে সোমবার বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটন বলছে, ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের কোনো ক্ষতি করা যাবে না। তাদের হামলা করা হলে তুরস্ককে অর্থনৈতিকভাবে শাস্তি দেয়ার হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এ হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক।

সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সর্বশেষ ফল হিসেবে দুই দেশ পরস্পরের বিরুদ্ধে টুইটারে পোস্ট দেয়।

তুরস্ক যখন সেখানে নতুন করে সেনা অভিযানের ছক আঁকছে, তখন মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের নতুন ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

কুর্দিশ প্রটেকশন ইউনিটস বা ওয়াইপিজিকে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) শাখা হিসেবে বিবেচনা করে তুরস্ক। পিকেকে কয়েক দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা চালিয়ে আসছে।

এদিকে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন মিত্র হচ্ছে ওয়াইপিজি। উত্তর সিরিয়ার বিশাল অঞ্চল এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

ট্রাম্পের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর সেখানে তাদের ঘাঁটি চুরমার করে দেয়ার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের বিতাড়িত করতে সিরিয়ায় মোতায়েন করা সেনাদের প্রত্যাহার শুরু করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যদি প্রয়োজন হয় তবে হামলা অব্যাহত থাকবে।

টুইটারে ট্রাম্প বলেন, ইসলামিক স্টেট যদি নতুন করে সংগঠিত হয়, তবে নিকটবর্তী ঘাঁটি থেকে ফের হামলা চালানো হবে। কিন্তু তুরস্ক যদি কুর্দিদের ওপর হামলা চালায়, তবে তাদের অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া হবে। একইভাবে কুর্দিরা যাতে তুরস্ককে উসকানি না দেন, সে জন্য ২০ মাইলের একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে।

ট্রাম্পের এ টুইটার পোস্টের পর ওয়াশিংটনকে ভর্ৎসনা করেছে তুরস্ক। এতে দুই ন্যাটো মিত্রের মধ্যে সম্পর্ক ফের তলানিতে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাদের মিত্র ও অংশীদার হতে পারে না। তুরস্ক আশা করছে, আমাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকে যুক্তরাষ্ট্র সম্মান দেখাবে। কিন্তু সন্ত্রাসী প্রপাগান্ডার মাধ্যমে এটাকে আমরা ছায়াচ্ছন্ন করতে চাই না।

অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়া বলতে ট্রাম্প কী বুঝিয়েছেন- তা জানতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ নিয়ে প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।

পম্পেও বর্তমানে সৌদি আরব সফরে রয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি। আমার ধারণা তিনি এমন কিছুই ভাবছেন।

এদিকে ট্রাম্প ও এরদোগান সোমবার ফোনালাপ করেছেন। মূলত বিতর্ককে প্রশমিত করতেই এ ফোনালাপ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কুর্দিদের রক্ষা করতে ওয়াশিংটন নাছোড়বান্দা।

এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একইভাবে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্ত থাকা সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস ও কুর্দিদের ওপর যাতে তুরস্ক হামলা না চালায়, সেটাও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্ব বলে জোর দেয়া হয়েছে।

বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানায়, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে সরিয়ে দিয়ে উত্তর সিরিয়ায় একটি নিরাপদ অঞ্চল সৃষ্টি করতে ট্রাম্প ও এরদোগান আলাপ করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫