রোহিঙ্গা ইস্যু আরও ভালোভাবে সামলানো যেত : সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু আরও ভালোভাবে সামলানো যেত বলে উল্লেখ করেছেন মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে আসিয়ানের ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে এমন মন্তব্য করেন তিনি। রোহিঙ্গা সঙ্কটের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর এ বিষয়টি নিয়ে প্রথমবারের মতো ইতিবাচক কথা বললেন এই নেত্রী।

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৩০টি পুলিশ চেকপোস্ট এবং সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি। এর পরেই রাখাইনের গ্রামগুলোতে অভিযানের নামে অত্যাচার-নির্যাতন চালায় মিয়ানমার সেনারা। রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ এবং রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম নিজেদের বাড়ি-ঘর থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

সু চি বলেন, কিছু উপায় অবশ্যই ছিল যার মাধ্যমে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে সামলানো যেত। সু চি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দীর্ঘ মেয়াদী নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আমাদের সবাইকে সমানভাবে দেখতে হবে। আমরা কোনো একটি নির্দিষ্ট পক্ষকে আইনের শাসনে সুরক্ষা দেওয়ার কথা ভাবতে পারি না।

তিনি তার বক্তব্যে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের প্রসঙ্গও তুলেছেন। গত সপ্তাহে ওই দুই সাংবাদিকের সাত বছর কারাদণ্ড ঘোষণার করে মিয়ানমারের একটি আদালত। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সংগ্রহের অভিযোগে ওই দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ওয়া লোন (৩২) এবং কিওয়াও সোয়ে ও-এর বিষয়ে তিনি বলেন, তারা সাংবাদিক বলে তাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই আছে। এ বিষয়ে তাদের কারাদণ্ড দেয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের আওতায় তাদের শাস্তি। তারা রাষ্ট্রীয় গোপণ নথি সংগ্রহ করেছিল। আমরা যদি সবাই আইনের প্রতি আস্থা রাখি তবে, ওই রায়ের বিপক্ষে তাদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। কেন এই রায় ভুল তার বিরুদ্ধে তাদের অবশ্যই প্রমাণ তুলে ধরতে হবে।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বর নির্যাতন চালায় সেনাবাহিনী। ওই ঘটনা জেনেও এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেননি সু চি। বরং বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনীর পক্ষে থেকেই রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি। এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে পড়েন নোবেল বিজয়ী এই নেত্রী।

১৯৯১ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন সু চি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে শান্তিতে নোবেল পান এই নেত্রী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

ফলে ব্রিটিশ ট্রেড ইউনিয়ন, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস, ইউএস হলোকাস্ট মিউজিয়াম, ডাবলিন এবং যুক্তরাজ্যের চারটি শহরসহ বেশ কিছু সংস্থা সু চিকে দেয়া তাদের সম্মাননা ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের অনুমতি নেই বলে অল্পের জন্য নোবেল পুরস্কার খোয়াননি সু চি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫