বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের বৈঠকে গতকালও দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি আন্দোলন এবং এ দাবিতে শক্ত কর্মসূচির পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সময় সিনিয়র নেতারা পিছু টান দেন। সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা বিদেশ পাড়ি দেন, নিষ্ক্রিয় থাকেন। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল শনিবার দিনব্যাপী বিভাগের সাংগঠনিক জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের স্থানীয় কমিটি। প্রথম পর্বে চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা এবং দ্বিতীয় পর্বে ঢাকা, ফরিদপুর এবং ময়মনসিংহের নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়।
বৈঠকে আগামী দিনের যে কোনো ধরনের আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকায় রাজপথে থাকার অঙ্গীকার করেন বিএনপির ঢাকা মহানগরের নেতারা। তারা বলেছেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ঢাকা মহানগর বিএনপি সুসংগঠিত। নতুন কমিটি হওয়ায় নেতাকর্মীরাও উজ্জীবিত। তাই আগামী দিনে যে কোনো ধরনের আন্দোলনে ঢাকা মহানগরীর নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফা আন্দোলনের পক্ষে মত দিয়েছেন বিএনপির তৃণমূল নেতারা। তারা বলেছেন, এ জন্য শিগগিরই কঠোর আন্দোলন দিতে হবে। তবে সেই আন্দোলনের দায়িত্ব দিতে হবে মাঠের নেতাদের। আন্দোলনের কথা শুনলে যেসব নেতা বিদেশে পাড়ি জমান বা নিষ্ক্রিয় থাকেন তাদের পরিহার করতে দলের নীতিনির্ধারকদের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বৈঠকে উপস্থিত কয়েক নেতার বিভিন্ন বক্তব্যের বিষয়ে জানা যায়। বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান বলেন, গণমাধ্যমে খবর দেখি ৩০০ আসনে ৯০০ প্রার্থী প্রস্তুত। তা হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাদের যার যার এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া হোক। তিনি বলেন, আন্দোলনের কথা শুনলে বিশেষ করে সাবেক মন্ত্রী-এমপি যারা বিদেশে পাড়ি জমান বা নিষ্ক্রিয় থাকেন, তাদের পরিহার করতে হবে।
সিলেটের সভাপতি আবুর কাহের শামীম বলেন, জামায়াতের ব্যাপারে বিএনপিকে সতর্ক থাকতে হবে। ২০ দলীয় জোটের সম্প্রসারণ ও জাতীয় ঐক্য গঠনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সভা পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী জানান, চার বিভাগের মোট ৭৩ জন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনের আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না।
ফরিদপুর জেলা সভাপতি শাহাজাদা মিয়া বলেন, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতাদের ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে আন্দোলন না করা যায়।
মুন্সীগজ্ঞ জেলার সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, নেত্রীর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না। আন্দোলনের জন্য যে কোনো নির্দেশ সফলে তারা প্রস্তুত আছেন।
ময়মনসিংহ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ওহাব আকন্দ বলেন, আন্দোলন না করে ফেসবুকে ছবি দিয়ে রাজনীতি করা পরিহার করতে হবে।
কিশোরগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। বিশ্বের সব স্বৈরশাসকের চরিত্র একই।
সূত্র : আমাদের সময়