স্পোর্টস ডেস্ক ॥
ইংল্যান্ডকে ৩০৬ রানের বড় লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। এত রান তাড়া করে আগে কেউ কখনো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জেতেনি। কিন্তু কঠিন সেই লক্ষ্যটা ইংল্যান্ড সহজ বানিয়ে ফেলল। জিতল অনায়াসে। ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানেই।
মাত্র ৬ রানে প্রথম উইকেট হারানো পরও ইংল্যান্ডের এমন অনায়াস রান তাড়া দেখে প্রশ্ন জাগছেই, আজ বাংলাদেশের দল নির্বাচন কি সঠিক ছিল? নাকি রক্ষণাত্মক হতে গিয়ে হিসেবে একটু গরমিল করে ফেলছে টিম ম্যানেজমেন্ট?
বাংলাদেশের এই একাদশের জন্য ভারতকে ‘দোষ’ দেওয়া যায়! ভারতের পেস বোলাররাই তো এমন ক্ষতি করল! প্রস্তুতি ম্যাচে ৮৪ রানে অলআউট হয়ে যাওয়াটা শঙ্কার বড় মেঘ এনে দিয়েছিল বাংলাদেশের শিবিরে। ফলে ব্যাটিং লাইনআপ লম্বা করতে আট ব্যাটসম্যান নিয়ে নেমেছে মাশরাফির দল। এই একাদশে ওপেনারই ছিল তিনজন!
ওয়ানডে, টেস্ট কিংবা টি-টোয়েন্টি যা-ই বলুন, ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে মাঠে নামার কার্যকারিতার প্রশ্ন থেকে যায়। এমন রক্ষণাত্মক কৌশল কখনোই ভালো ফল এনে দেয় না। কারণ, যেদিন ব্যাটিংয়ে ধস নামে, সেদিন ৮ ব্যাটসম্যানেও তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় না। আর যেদিন টপ অর্ডার ভালো করে সেদিন সেটা রূপ নেয় বাহুল্যে।
আজ যেমন হলো। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত ভিত্তি পেয়েও শেষ পাঁচ ওভারে ৪৩ রানের বেশি হলো না। লাইনআপে মোসাদ্দেক হোসেনের মতো ব্যাটসম্যানকে আটে নামানোর যে কোনো মানে হয় না, সেটা আবারও প্রমাণ হলো। ইমরুল কায়েসকে তিনে জায়গা দিতে ব্যাটিং লাইনআপে এমন পরিবর্তন, আর তাতে জায়গা হারিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভারতের বিপক্ষে অন্য বোলারদের অসহায় আত্মসমর্পণের মাঝে যিনি স্লগ ওভারে বল করেও ৯ ওভারে মাত্র ৩৯ রান দিয়েছিলেন। তা ছাড়া মিরাজের নামটি ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের জন্যও তো একটা স্নায়ুচাপের!
আর আজকের পিচে একজন স্পিনার থাকা যে কত জরুরি ছিল সেটা মঈন আলীই দেখিয়েছেন। ৮ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৪০ রান। অনিয়মিত অফ স্পিনে জো রুটও ৩ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৮। সাকিব আল হাসান কিংবা মোসাদ্দেকের বোলিং দেখে নিয়মিত অফ স্পিনারে শূন্যতা আরও বেশি অনুভব করেছে বাংলাদেশ। আর রুবেলের তুলনায় মোস্তাফিজই বেশি ভয় জাগানোতেই পরিষ্কার, এ পিচে থেমে আসা বলেই ব্যাটসম্যানদের মাথা ঘামাতে হচ্ছে বেশি।
৮ ব্যাটসম্যান, তিন বোলার। অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিবের কাছ থেকে ১০ ওভার পেলেও ৪০ ওভার করার মতো সামর্থ্য ছিল এই একাদশের। নিয়মিত বোলারদের একজন খারাপ করলে পার্টটাইমারদের দিয়ে কাজ চালানোর বিকল্প থাকে। আজ পার্টটাইমারদেরই নিতে হয়েছে মূল ভূমিকা!
ম্যাচ শেষেও সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার, নাসের হুসেইন, আতহার আলী খানের বিশ্লেষণে বারবার ঘুরে ফিরে এল এই প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের একাদশ অতিরক্ষণাত্মক ছিল কি না। একজন স্পেশালিস্ট বোলারের শূন্যতা বেশি করে ভুগল কি না দল। প্রথমআলো