বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
সাভারের ট্যানারির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ধলেশ্বরী নদীতে। পানিতে পাওয়া গেছে অতিমাত্রার বিষ ক্রমিয়াম। লবণের পরিমাণও কয়েকগুণ বেশি। পানিতে দুর্গন্ধের বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী অতিষ্ট। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ট্যানারি শিল্পে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু না হবার মাসুল গুনছে ধলেশ্বরী।
ধলেশ্বরীর পানি ওপরে দেখে স্বাভিবক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে দূষণ দানা বাধতে শুরু করেছে। ট্যানারির অপরিশোধিত বর্জ্য মিশছে নদীর পানিতে। ফলে দুর্গন্ধ বেড়ে যাচ্ছে পানিতে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে ধলেশ্বরীতে দূষণ ক্রমেই বাড়ছে। সম্প্রতি ট্যানারির সিইপিটি থেকে বের হওয়া পানির নমুনা পরীক্ষা করে ক্ষতিকর ১১টি উপাদান পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এরমধ্যে ৭টিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিমাত্রার রাসায়নিক মিলেছে।
চামড়ায় ব্যবহৃত লবণ পরিশোধনের ব্যবস্থা এখনও সিইটিপিতে যুক্ত করা হয়নি। তাই পানিতে ক্ষারের পরিমাণও বেড়েছে। পুরো বিষয়টি ধলেশ্বরীর জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক আলমগীর বলেন, ‘ধলেশ্বরী নদীর দুইÑএকটা পয়েন্টের পানি সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে পানিতে লবণের মাত্রা বেশি। লবণ পৃথকীকরণের প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হয়নি। এটা করা গেলে অন্যান্য উপাদানগুলো মানমাত্রার মধ্যে পাওয়া যাবে বলে আশা করি’।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ট্যানারির আশেপাশের নদী সীমানায় কোন মাছ নেই। অন্যদিকে দুর্গন্ধ তো আছেই। বাসিন্দাদের মধ্যে একজন বলছিলেন, ‘সাভারে ট্যানারি আসার পর থেকে ময়লা পানি নদীতে আসে। মাছ নাই। দুর্গন্ধযুক্ত পানি। আগে পানি ভালো ছিলো। কিন্তু ট্যানারি আসার পর থেকে গন্ধ বেড়ে গেছে।’
হেমায়েতপুরের ট্যানারি পল্লীতে এরইমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে ৩৬ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু লবণ থেকে সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সাভারের ট্যানারি পল্লীও আরেকটি নদী দূষণের কারণ হবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
ট্যানারি থেকে তৈরি হওয়া বর্জ্য পুরোপুরি পরিশোধন না করেই ফেলা হচ্ছে ধলেশ্বরী নদীতে। এলাকাবাসীরা বলছেন, দূষিত বর্জ্যরে কারণে গত তিনমাস আগেও এই নদীর মাছ মারে ভেসে উঠেছিলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে ট্যানারি চালু করা হলে ভবিষ্যতে বুড়িগঙ্গার মতো ধলেশ্বরীও একটি মৃত নদীতে পরিণত হবে । একাত্তর টিভি