স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাজধানীতে গণপরিবহনে চলাচলকারী যাত্রীদের সুবিধার জন্য সিটিং সার্ভিস বন্ধ করা হলেও সেটি আসলে তাদের কোনো উপকারে আসছে না। গত রবিবার থেকে সিটিং সার্ভিস নামে চলাচলকারী প্রায় সব বাস-মিনিবাসই লোকাল বাসের মতো যত্রতত্র যাত্রী তুলেছে। তবে ভাড়া আদায় করেছে আগের মতোই। অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় সৃষ্ট ভিড়ের কারণে বাসে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন নারী, শিশুসহ অন্য যাত্রীরা।
তাই অনেক যাত্রী দাবি করছে সিটিং সার্ভিস আবার ফিরিয়ে আনা হোক। রাজধানীর ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে আব্দুল্লাহপুর গামী ৩ নম্বর গাড়ীটি এতদিন সিটিং চলতো। ভাড়া ছিল ৩৫ টাকা। সে বাসের নিয়মিত যাত্রী মাসুদ রানা।
তিনি বলেন, আমি প্রায় বঙ্গবাজার থেকে মাল নিয়ে এবাসে করে যাই। গতকালও গেলাম আজও যাচ্ছি। সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়াতে ভাড়া কমেছে মাত্র ৫ টাকা। এতে আমি কি লাভ হলো বলেন?
মাত্র ৫ টাকার জন্য আমাদের কত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বাসটি জায়গায় জায়গায় থামছে লোক উঠাচ্ছে, নামাচ্ছে। মানুষের চাপাবাজি গরমের দিন খুব কষ্ট হয়ে যায়। আমরা চাই না মাত্র ৫ টাকার জন্য এমন অবস্থা হোক।
এদিকে আবারও সিটিং সার্ভিস ফিরিয়ে আনতে বললেন তানিয়া তমা। রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে প্রায় ঘন্টা খানিক দাঁড়িয়ে থেকে অনেক কষ্টে একটা বাস পেলেন তিনি। গন্তব্য মিরপুর ১০। এ রুটে মিরপুরের প্রচুর গাড়ি থাকার সর্থেও এখন আর তা মিলছেন না বলে জানান এ ডাক্তার।
তানিয়া বলেন, সিটিং বন্ধের আগে গাড়ির জন্য কখনো অপেক্ষা করতে হতো না। দাঁড়ালেই পেয়ে যেতাম। কিন্তু দেখুন আজ এক ঘন্টার মত দাঁড়িয়ে আছি কোন লাভ হচ্ছে না। সিটিং পরিবহন গুলো আমাদের জন্য নিরাপদ। হয়তো তারা পাঁচ টাকা দশ টাকা বেশি নেয় কিন্তু আরামে যাওয়া যায়। এখন কিন্তু অনেক মানুষের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি করে যেতে হচ্ছে।
অথচ ভাড়া কমেছে মাত্র দুই টাকা। তাহলে সিটিং বন্ধ করে কি লাভ । তার থেকে সিটিংই ভালো। আমরা চাই সিটিং সার্ভিস আবারও চালু হোক তবে চিটিং নয়। যুক্ত করলেন ল্যাবএইড মেডিকেলের এই ডাক্তার।
ভিক্টোরি পরিবহনের চালক ইব্রাহিম জানান, আমাদের ৪০ জনের সিট। আমরা আগে ৪০ জন নিয়েই যেতাম। আর এখন প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ জন যাত্রী তুলি। এতে আমাদেরই লাভ হয়। মানুষের কষ্ট হয়। ধাক্কাধাক্কি করতে হয় পকেটমার মোবাইল হারা। সিটিং থাকা কালিন কারো এসব হারাতে হতো না। সিট অনুযায়ী আমরা যাত্রী নিতাম।
পরিবহন শ্রমিকদের মতে রাজধানীর ৭০/৮০ ভাগ যাত্রী চাইছে আবারও সিটিং সার্ভিস চালু করা হোক। আর যাত্রীদের মধেও দেখা গেছে সে রকম আগ্রহ। অনেকেই সিটিং সেবা পক্ষে।