স্টাফ রিপোর্টার ॥
শুভ ইস্টার সানডে আজ। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দিন। এই দিনে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান করেছিলেন। এই দিনেই (গুড ফ্রাইডেতে) বিপথগামীরা যিশুখ্রিষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল।
মৃত্যুর তৃতীয় দিবস অর্থাৎ রোববার তিনি জেগে উঠেছিলেন। যিশুখ্রিষ্টের এই পুনরুত্থান খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জন্য খুবই আনন্দের এবং তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনটিকে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা ইস্টার সানডে হিসেবে পালন করে থাকে। খ্রিস্টধর্মীয় মতে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল। এটি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য আনন্দের দিন। চল্লিশ দিনের প্রায়শ্চিত্তকাল বা রোজা শেষে এ ইস্টার সানডে তাদের জন্য বয়ে আনে আনন্দের বার্তা। আজকের দিনটিকে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পালন করবে তারা। এ উপলক্ষে দেশের সব চার্চেই বিশেষ খ্রিস্টযোগ বা প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ইস্টার সানডে উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, খ্রিস্টান লীগ এবং ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ নেতারা পৃথক বিবৃতিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এদিকে চল্লিশ দিনের রোজা পালন শেষে এ ইস্টার সানডে বিশ্বের সকল খ্রিস্টভক্তদের জীবনে বয়ে আনে নির্মল আনন্দ ও শান্তি গভীর রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় ইস্টার সানডে উদযাপন। প্রতিটি চার্চে খ্রিস্টভক্তরা চার্চে গিয়ে উপস্থিত হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করেন। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে ইস্টার সানডের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। খ্রিস্টভক্তরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কীর্তন করে রাতের বাকি সময় পার করে দেন। একইভাবে আজ রোববার বিভিন্ন খ্রিস্টীয় সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই বিশেষ দিনটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইস্টার সানডেতে সরকারী ছুটি ঘোষণা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস)। চার্চের পুরোহিতরা জানান, ইস্টার সানডে গোটা বিশ্বের খ্রীস্টিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য একটি আনন্দের বিষয়।
আর এই ইস্টার সানডে প্রভু যিশুর পুনরুত্থান উৎসব বলে অভিহিত। প্রত্যেক খ্রিস্ট ভক্তগণ আজ মহাসমারোহে প্রভু যিশুর পুনরুত্থান ও তাঁর মহাগৌরব প্রতাপ স্বীকার করে নিচ্ছে। আজ যিশুর পুনরুত্থান উৎসব। তিনি পাপতাপীর নিমিত্তে ক্রুশে সমর্পিত হয়েছিলেন। শত্রুদের দ্বারা প্রভু যিশু প্রহারিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত, যন্ত্রণাভোগ এবং সর্বপূরি ক্রুশের উপর জীবন সমর্পণ করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। কিন্ত তাঁর এই মৃত্যু ছিল ক্ষণস্থায়ী। তিন দিনের পরই তিনি মহাগৌরবে তাঁর পরাক্রম অসীম শক্তির পরিচয় দান করলেন। তিনি বেঁচে উঠলেন।
বলাবাহুল্য যে, প্রভু যিশুর এই পুনরুত্থান উৎসব পালনের পটভূমিতে রয়েছে খ্রিস্ট ভক্ত অনুসারীদের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি। প্রভু যিশুর এই পুনরুত্থান উৎসব শুধু ভক্ত জনগস্টের আনন্দের সহভাগী হন না, আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে নতুন জীবনের দিকনির্দেশনা খুঁজে পান ভক্তগণ। আর এই নতুন জীবনের মধ্যে রয়েছে পরম শান্তি সৌহার্দপূর্ণ ভালবাসা, পারস্পরিক মিলন, একে অপরকে ক্ষমাদান এবং ক্ষমার মনোভাব নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাজে ও পরিবারে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করার প্রতিশ্রুতি। আজ সারাবিশ্ব পেতে চায় শান্তি যিশুর এই পুনরুত্থান মানুষের পরিত্রাণের পথকে সুগম করে তোলে। জীবন পরিবর্তন, আচার-আচরণ স্বভাব পরিবর্তন করেও যেন ঐশ্ব্যমহিমার এবং অনন্ত জীবন পাবার প্রত্যাশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।