বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
আজ রোববার তুরস্কের অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণভোট। আজ গণভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে তুরস্কের ভবিষ্যত। এ গণভোট যদি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ানের প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে যায়, তাহলে তুরস্কের শাসনপদ্ধতিতে এক মৌলিক পরিবর্তন ঘটে যাবে বলে বিশ্লেষকদের দাবি।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হবে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ক্ষমতার ব্যাপক বৃদ্ধি। এ জন্য তার বিরোধীরা প্রবলভাবে চেষ্টা করেছেন এটা ঠেকানোর জন্য। পার্লামন্টে এ নিয়ে বিতর্কের সময় এমপিদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। একজন সরকারপন্থী এমপি অভিযোগ করেছেন, এক বিরোধী এমপি তার পায়ে কামড় দিয়েছেন। ফুলের টব ছুঁড়ে মারা হয়েছে। মাইক্রোফোন চুরি করে তা ‘অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে।
কী পরিবর্তনের কথা আছে এ গণভোটের বিষয়বস্থতে- যা নিয়ে এমন তীব্র দ্বন্দ্ব?
প্রথমত: এই সাংবিধানিক পরিবর্তনে তুরস্কের পার্লামেন্টারি পদ্ধতি বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার প্রবর্তনের কথা আছে। প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান, এবং রাজনৈতিক দলের সাথেও তার সম্পর্ক বজায় থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে। প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশকে নিয়োগও দেবেন তিনিই, এবং ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন।
প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না।
তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটেএমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টর বিচারের জন্য দু তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগবে।
এমপিদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে হবে। প্রেসিডেন্ট দু মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
এরদোয়ানের কথায়, এ সব পরিবর্তন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে।
কিন্তু তার সমালোচকরা বলছেন, এতে মি. এরদোয়ানের স্বৈরশাসন কায়েম হবে, গণতন্ত্রের মৃত্যুঘন্টা বাজবে। দেখার বিষয় তুরস্কের জনগণ কি রায় দেয়।
সূত্র : বিবিসি বাংলা