বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
তিস্তা নিয়ে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা অনেক আন্দোলন করেছেন। ভবিষ্যতে এ আন্দোলন আরও বড় আকারে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ম.ইনামুল হক।
ডিবিসি চ্যানেলে ‘রাজকাহন’ বুধবার এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, আমি বুঝতে পারছি যে কোথায় থেকে কোথায় যাওয়া হচ্ছে। কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে। কারণ,আমরা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি যে, তিস্তায় পানি আসছে। অথচ আমাদের এলাকা শুকিয়ে যাচ্ছে। আর ওরা তিস্তার পানি সরিয়ে নিয়েও তা ব্যবহার করতে না পেরে ডাহুক ও মহানন্দা নদীতে নিয়ে ফেলে দিচ্ছে।
ম.ইনামুল হক আরও বলেন, তিস্তা নিয়ে যৌথ যে ঘোষণা এসেছে তাতে কিন্তু ভারত বলে নাই যে, আমরা এমন কোনো কাজ করব না যাতে করে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়। কিন্তু তারা না বললেও আমি মনে করি তাদের কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয় তাহলে তারা রাষ্ট্রীয় পর্যায় বলবেন যে, হ্যা আমরা এমন কোনো কাজ করবো না যাতে করে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। এমনকি এই কথাটি যদি লিখে দিতেও বলা হয় তাহলেও তারা লিখে দিবে। কিন্তু এই বলায় বা লেখায় কি আসে যায়,আমাদের ক্ষতিতো হয়েই যাচ্ছে। তিস্তার পানি সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রচন্ড ক্ষতি হচ্ছে। গঙ্গায় যে পরিমাণ পানি আসার কথা তার চেয়ে কম আসছে। এর ফলে দেখা যাচ্ছে যে আমাদের দীর্ঘকাল ধরে ক্ষতির মধ্যেই পড়ে
তিনি বলেন, তারা তিস্তার পানিটা গজলডোবা ব্যারেজের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়ে পশ্চিম বঙ্গে যে ৯ লাখ ২২ হাজার হেক্টর বিস্তৃত সেচ প্রকল্প রয়েছে সেখানে ব্যবহার করার জন্য নিচ্ছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ ১ লাখ হেক্টরের বেশি এগোয়নি। যার ফলে তারা তিস্তা থেকে যে পরিমাণ পানি সরিয়ে নেয় সেই পরিমাণ পানি লাগেনা। তাই তারা পানি ব্যবহারও করতে না পেরে ডাহুক ও মহানন্দা নদীতে নিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমাদের কে বলা হচ্ছে তিস্তায় জল নেই। অথচ ডাহুক ও মহানন্দার পানিটা গিয়ে গঙ্গার উজানে গিয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, তলে তলে ভারতের আন্ত:নদীর সংযোগ পরিকল্পনার ১ নম্বর খালের কাজ হয়ে যাচ্ছে। ভারত তো দেখছে যে, হাসিনা ও মমতার মধ্যে সমতা হচ্ছে, হতে থাক। আমার কাজটা হলেই হলো। এটা কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা।
তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে যখন যৌথ ঘোষণা হয়, তখন দুই দেশের কূটনৈতিকরা তাদের মত করে এক ধরনের একটা কূটনৈতিক ভাষায় এগুলো লিখেন। ভরসাটা ওখানে থাকে যখন আমরা একটা দেশ যথেষ্ট অবস্থান নিয়ে ওদের লিখিত ভাষাটাকে পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি এবং আমাদের স্বপক্ষে নিতে পারি তাহলে কিন্তু হয়। কিন্তু এটা দেখছি কি যে, বছরকে বছর যাচ্ছে কিন্তু তিস্তায় কোনো সমাধান আসছে না।
তিনি আরও বলেন, তারা যে পানি নিয়ে ফেলে দিচ্ছে আর মমতা বলছেন যে, তিস্তায় পানি নাই। তার বিপরীতে আমাদের কূনৈতিকরা বলতে পারছেন না বা বলছেন না যে, আপনারাতো পানিটা ফেলে দিচ্ছেন। আমি খবর নিয়ে দেখেছি যে, আমরা কেউ এই কথাটা তুলে ধরছি না। এটা একটা সমস্যা বলে আমি মনে করি।