বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
নয়াদিল্লি থেকে: ভারত সফরে এসে তিনদিন ধরে রাষ্ট্রপতি ভবনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিও সে ভবনেরই বাসিন্দা। এই তিনদিনে অনেকবার দেখা হয়েছে নিশ্চয়। সংবাদমাধ্যমে খবর আছে, ভাপে রান্না ইলিশ, নিজ হাতেই রান্না করে প্রণব মুখার্জিকে খাইয়েছেন শেখ হাসিনা। আসলে দীর্ঘ পারিবারিক সম্পর্কও যে রয়েছে।
তবে এবার হলো আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ। রোববার (০৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৭টা) রাষ্ট্রপতি ভবনেরই উত্তর ড্রয়িং রুমে শেখ হাসিনা সাক্ষাতে বসেন প্রণবের সঙ্গে। বেশ কিছু সময় তারা কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব জানান, অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেন প্রণব মুখোপাধ্যায় ও শেখ হাসিনা। একাত্তরের দিনগুলো নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তারা। ভারতীয় রাষ্ট্রপতির স্ত্রীর মৃত্যুর পর শোক ও সমবেদনা জানাতে যে শেখ হাসিনা দিল্লি এসেছিলেন সে কথাও স্মরণ করেন প্রণব। এজন্য তিনি শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা এসময় তার এই সফরের বিভিন্ন দিক নিয়েও কথা বলেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ব্যাপক প্রশংসা করেন প্রণব।
এর আগে শেখ হাসিনা বৈঠক করেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। সোনিয়া পুত্র রাহুল গান্ধীও এ সময় মায়ের সঙ্গে ছিলেন।
ওই বৈঠক প্রসঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, সোনিয়ার সঙ্গেও বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন সোনিয়া। তিনিও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন।
রাষ্ট্রপতি ভবনের উত্তর ড্রয়িং রুমে এই বৈঠকটি হয়। এসময় ভারতের বিরোধীদলীয় নেত্রী সোনিয়া গান্ধী শেখ হাসিনাকে বলেন, সরকারের সঙ্গে তার দলের নানা বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও বাংলাদেশের ব্যাপারে যেকোনো প্রয়োজনীয় ভূমিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা ঐক্যমত্যই পোষণ করেন, এক থাকেন।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়নেরও প্রশংসা করেন তিনি।
এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, বাগেরহাটের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এই উভয় সাক্ষাতের পরপরই শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের অশোকা হলে এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। আর তার পর ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে আয়োজন করা হয় নৈশভোজের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আসা সফরসঙ্গীদের অনেকেই এই দু’টি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আগেই জানিয়েছে, নৈশভোজের জন্য আয়োজনে চিতল মাছের মুইঠ্যা, চিংড়ির মালাইকারি, ভেটকি মাছের পাতুরি থাকবে। এর বাইরে উত্তর ভারতীয় গোশত ইয়াখনি, রাইজিনা কোফতা, মুর্গ দরবারি প্রভৃতিও থাকছে খাবারের তালিকায়।ে