বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ভেজাল ওষুধ মামলা পরিচালনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দুর্বল তদন্তসহ অধিদপ্তরের গাফিলতিতে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এতে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। এমনকি গত ৫ বছরে ড্রাগ কোর্টে দায়ের হওয়া ১২১টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তির সংখ্যাও জানা নেই তাদের। শুধু তাই নয়, তারও আগের কোন মামলারই হিসাব জানে না অধিদপ্তর।
২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে রীড ফার্মার প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় করা মামলায় ড্রাগ কোর্ট গত নভেম্বরে রায় দেয়ার পরে পাঁচ আসামির সবাই খালাস পেয়ে যান। এর জন্য দুর্বল তদন্তকেই দায়ী করে আদালত।
ড্রাগ কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাদিম মিয়া বলেন, ‘মামলা প্রস্তুত করার পূর্বে ড্রাগ প্রশাসন অধিদপ্তরের আইন উপদেষ্টার কোন বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে পরামর্শ করে মামলা প্রস্তুত করা উচিৎ।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হিসেবে, গত পাঁচ বছরে ড্রাগ কোর্টে দায়ের হয় ১২১টি মামলা। এর মধ্যে ২০১২ সালে ৩টি, ১৩ সালে ১৯টি, ১৪ সালে ৩১টি, ১৫ সালে ২৭টি এবং ১৬ সালে ৪১টি মামলা। অথচ এসব মামলার কয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে বা বাকি মামলার অগ্রগতি কতোটুকু, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই অধিপ্তরের কাছে। বেশির ভাগ মামলাই এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি বলে জানা গেছে।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ড্রাগিষ্ট অ্যান্ড কেমিষ্ট সমিতির অভিযোগ, ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে আরো বেশি মামলা হওয়ার কথা থাকলেও অধিদপ্তরের দুর্নীতির কারণে অনেকেই ছাড় পাচ্ছেন। আর মামলা হলেও সে বিষয়ে তদারকি করছে না অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট সমিতির সভাপতি সাদেকুর রহমান বলেন, ‘অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিজেদের পকেট ভারি করার চেষ্টায় ব্যস্ত। তা না হলে, আমরা নকল ওষুধ ধরে ওষুধ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করি। কিন্তু মকদ্দমা করার জন্য চেষ্টা করা হলেও তারা তা করে না।’
অতীতে মামলা তদারকিতে ব্যর্থতার জন্য জনবল সংকটকে দায়ী করছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তাদের দাবি, এখন সংকট কাটিয়ে উঠেছে তারা।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, ‘সবগুলো মামলার তদারকি হচ্ছে। মামলাতে যখন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাক্ষী প্রদান করতে দেয়া হয়, তারা সাক্ষী প্রদান করে থাকেন।’
তবে অধিদপ্তরের এ দাবির বাস্তব ভিত্তি নেই বলছেন ওষুধখাত সংশ্লিষ্টরা। সূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি