চুরির ৫০ শতাংশ টাকাই পেতেন ব্যাংক কর্মকর্তারা

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: ব্যাংকের কার্ড জালিয়াতির ৫০ ভাগ টাকা দিতে হতো চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের। আর কার্ড জালিয়াতির অপারেশন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করে পিওটর সিজোফেন (থমাস পিটার) পেতেন ২০ শতাংশ টাকা।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কার্ড জালিয়াতি চক্রের হোতা পিওটরসহ তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।

গ্রেফতারের পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, পিওটর বাংলাদেশে আসার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এদেশে আসেন আন্তর্জাতিক চক্রের দু’নারী সদস্য। তারা ফিরে যাওয়ার পরপরই ব্যাংকের কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা শুরু করেন পিওটর।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ব্যাংক কর্মকর্তারা জালিয়াতির ঘটনায় নানাভাবে সহযোগিতা করলেও মূল অপারেশনাল কাজ করতেন পিওটর। আর এ কাজে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতেন আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের দু’নারী সদস্য ইউক্রেনের এএনডি এবং রোমানিয়ার রোমিও। এই চক্রের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ফরিদ নাবির।

এই ফরিদ নাবির ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় নিয়ে আসেন পিওটরকে। পরবর্তীতে তিনি চলে গেলেও ঢাকায় থেকে যান পিওটর। দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি আবারো ঢাকায় আসেন ফরিদ নাবির। ওঠেন গুলশানের হলিডে প্লানেড হোটেলে। তবে কার্ড জালিয়াতির ঘটনার পর ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি আবারো লন্ডনে ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছেন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে উপার্জিত মোট টাকার ৫০ শতাংশ পেতেন সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা। পিওটর নিতেন ২০ শতাংশ। আর বাকী টাকা চলে যেতো আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের কাছে।

সূত্র জানায়, পোল্যান্ড, স্পেন, ইংল্যান্ডে এই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা রয়েছেন। ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশ সহজ বলে এ ধরনের ক্রাইম করে খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যেতে পারেন তারা।

গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (উত্তর) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বলেন, এটিএম বুথে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনার তদন্ত চলছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে।

এর আগে, গত ৬ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজধানীর ইস্টার্ন, সিটি ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চার বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে কার্ডের তথ্য চুরি ও পরবর্তী সময়ে কার্ড ক্লোন করে গ্রাহকদের অজান্তে টাকা তুলে নেওয়া হয়। বিষয়টি ১২ ফেব্রুয়ারি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় বনানী থানায় ইউসিবি এবং পল্লবী থানায় সিটি ব্যাংক আলাদা দু’টি মামলা করে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, জালিয়াতির ঘটনায় ৪টি ব্যাংকের ৪০ জন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের হিসাব থেকে প্রায় ২১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
272829  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫