দেরিতে বিয়ে, নারীরা ভোগেন যে সমস্যায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক ॥

ঢাকা: লেখাপড়া, ক্যারিয়ার গোছানো এবং উপযুক্ত পছন্দের অভাবে হয়তো বিয়েটা করা হয়নি। একমনে করে চলেছেন নিজের কাজ। লেখাপড়া শেষ করেও চাকরি বা ব্যবসার ভালো অবস্থানের জন্য আরও দুয়েক বছর অপেক্ষা। হয়তো পরিবারও আপনার বিয়ে নিয়ে তেমন কিছু ভাবছে না। আপাত দৃষ্টিতে সব ঠিক থাকলেও গুঞ্জন কিন্তু ঠিকই তৈরি হয়ে যায় চারপাশে। আপন আত্মীয়দের মধ্যে কেউ কেউ এতো উদ্বিগ্ন থাকেন বিয়ে নিয়ে যে, নিজেই অবাক হওয়ার জোগাড়। তাদের কথা, চোখ-মুখের ভাষা বার বারই প্রমাণ করতে ব্যস্ত আপনার কোনো দুর্বলতার জন্যই এতোদিনে বিয়ে হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন যেকোনো প্রাপ্ত বয়স্ক অবিবাহিতা নারী। সমস্যা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, আরও অনেক নতুন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যেমন-

বিষণ্ণতায় ভোগা

সমবয়সী সবার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সঙ্গ দেয়ার মতো কেউ থাকে না। সবাই নিজের মতো ব্যস্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যার বিয়ে হয়নি, তিনি হয়ে পড়েন একলা। প্রিয় বোন বা বান্ধবীদের খুব একটা কাছে পান না, কাটানো হয় না ভালো সময়। সবমিলিয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়েন, আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শুন্যতা।

অযোগ্য মনে হওয়া

সমবয়সী সবাই নিজের জীবন সঙ্গী পেয়ে গেছে। বয়সটা একটু বেড়ে যাওয়াই আগের মতো বিয়ের প্রস্তাবও আসেনা। হয়তো দীর্ঘদিনের বয়ে আনা প্রেমও বিফল, কিংবা পরিবার থেকে চেষ্টা করেও ফল হচ্ছে না। বিশেষ করে আমাদের দেশে পাত্রী দেখাবার প্রক্রিয়াটা খুব অপমানজনক। এক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হবার পর নিজেকে অনেকেই অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন।

অথচ এমনটা ভাবা মানে অকারণেই নিজেকে ছোট করা। মনে রাখবেন, কোন পুরুষের আপনাকে পছন্দ হয়নি মানেই আপনি অযোগ্য নন। এটা নিয়ে কষ্ট পাবার কিছু নেই। সম্ভব হলে ঘটা করে পাত্রী দেখার আয়োজনটা এড়িয়ে যান। নিজের যোগ্য পাত্রের জন্য স্থীর মনে অপেক্ষা করুন, অনেকটাই স্বস্তি পাবেন।

অযথা অস্থির হওয়া

অনেক নারীই এই কাজটি করে ফেলেন। দ্রুত একটি ভালো বিয়ের জন্য অযথা অস্থির হয়ে যান। ক্রমাগত সামাজিক ও পারিবারিক চাপ থেকে এটা হতে পারে। মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে ‘বয়স পার হয়ে যাচ্ছে’! আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠেন অনেকেই।

বারবার ঘটকের কাছে যাওয়া, অফিসে বা পরিচিত মহলে নিজেকে পাত্রী হিসাবে উপস্থাপন ইত্যাদি করতে গিয়ে নিজেকে হাসি ও করুণার পাত্রে পরিণত করে ফেলেন তারা।

ভুল মানুষকে বেছে নেয়া

ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে যাকে সামনে পেলাম, তাকেই বিয়ে করে ফেললাম। কিংবা যে রাজি হলো, তাকে পছন্দ না হলেও করে নিলাম। অনেকেই এই ব্যাপারটিকে ভালোবাসা ভেবে নিজেকে শান্তনাও দিতে চান। আবার অনেকে পরিবারকে খুশি করার জন্য নিজেকে রীতিমত চাপ দিয়ে বিয়েতে রাজি করান। এই ভুলটি কখনো করবেন না। একটাই জীবন এবং এই জীবনে একটি ভুল বিয়ে আপনার অশান্তি বাড়াবে ছাড়া কমাবে না।

আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা

যে সমাজে একজন মেয়ের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের স্ট্যাটাসের ওপর। সঠিক সময়ে বিয়ে করে সবার মধ্যমণি হওয়ার সুযোগ মেলে- সেই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।

যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষেরাই বলতে থাকে যে ‘তুমি এখনো বিয়ে করতে পারলে না’ তখন অনেক নারীই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন জীবন থেকে। ভুলেও কাজটি করা যাবে না। আপনার জীবনে মাথা উঁচু করে আপনাকেই বাঁচতে হবে। আত্মবিশ্বাসই মানুষকে নিঃশ্বাস নিতে দেয়, স্বস্তি দেয়।

তাই কোনো নারীর নিজেকে বিয়ে বা সংসারের মাপকাঠিতে মাপা ঠিক হবে না। আপনি মানুষ, নিজেকে মাপুন নিজের যোগ্যতার মাপকাঠিতে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
272829  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫