স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা : সরকার ‘মামলা প্রকল্প’র পরে এখন ‘নির্বাচনী প্রকল্প’ গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (বরখাস্তকৃত) মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের মুক্তির দাবিতে ‘অধ্যাপক এম এ মান্নান মুক্তি পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে।
এ প্রসঙ্গে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেছেন, ‘সরকার একটির পর একটি নির্বাচন করবে এবং সে নির্বাচনে তারা সব দখল করে নেবে। এরপর জাতির কাছে বলবে, দেখ আওয়ামী লীগ কত জনপ্রিয়! সে কারণেই তারা প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করছে। তারা দেখাবে, ধানের শীষ হেরে গেল আর নৌকা জিতে গেল।’
সরকার গত কয়েক বছরে প্রায় ৪ লাখ ১৮ হাজার মামলা দিয়েছে, এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব মামলায় ৩২ হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা এবং ৪৫০জনকে গুম করা হয়েছে। গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে কয়েক শত নেতা-কর্মীকে। এই হচ্ছে গণতন্ত্রের নমুনা, মানবাধিকারের অবস্থা।’
তিনি বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায় লেখা হয়, বিএনপি সঙ্কটে পড়েছে। এ সঙ্কট শুধু বিএনপির নয়, এ সঙ্কট সমগ্র জাতির। আজ ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয়েছে- এটা বিএনপির সঙ্কট নয়, জাতির সঙ্কট। এটি মুক্তচিন্তা ও সত্য কথা বলার সঙ্কট। এ সঙ্কট থেকে কেউ মাপ পাবেন না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই এ দলের জন্ম। বিএনপির মধ্যে যতজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন, আপনাদের দলে ততজন মুক্তিযোদ্ধা আছে কিনা সন্দেহ আছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘গাজীপুরে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাপক চাঁদাবাজি চলছে। কথা বলা যায় না। মানুষকে দাঁড়াতে দেয়া হয় না। সংগঠন যদি শক্তিশালী হয় তাহলে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা সম্ভব। তাই ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জোড়াতালি দিয়ে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কিছুদিন টিকে থাকা যায়, কিন্তু বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। এখনো সময় আছে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসুন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, ড্যাব নেতা অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল ইসলাম, সুরুজ আহমেদ প্রমুখ।