বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: মাত্র ১৬ বছর বয়সেই কলকাতার বিখ্যাত যৌনপল্লী সোনাগাছিতে পাচার হয়ে আসেন রিতা। এরপর থেকে তিনি এখানে খদ্দেরদের মনোরঞ্জনে রূপচর্চা করে যাচ্ছেন প্রায় এক দশক ধরে। তবে তার স্বপ্ন টিভিতে অভিনয়ের। সম্প্রতি তিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরেক ধাপ এগিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। যৌনকর্মী রিতা একাই অভিনয়ের এ স্বপ্ন দেখছেন না। কলকাতার সোনাগাছিতে কয়েকশ যৌনকর্মী ও তাদের সন্তানকে টিভি কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে অভিনয়ের সুযোগ করে দিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে তারা ভাষা শিক্ষা, নাচ, গান কিংবা ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়া শিখছেন। একই যৌনপল্লীতে ২২ বছর বয়সী তরুণী রেশমী। তার মা একজন যৌনকর্মী এবং ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় তাকে জোর করে এ পেশায় নামানো হয়। সে বর্তমানে প্রতিদিন বিকেলেই ইংরেজি ভাষায় কথা বলা ও নাচ শিখছে। এ কাজের উদ্যোক্তা একটি বেসরকারি সংস্থা, যাদের অফিস রয়েছে সোনাগাছিতে। প্রতিদিন অনুরূপ কয়েকশ শিশু ও নারী বর্তমানে যৌনকর্মী পেশা ত্যাগ করে রূপালি পর্দায় আত্মপ্রকাশের আশায় বুক বেঁধেছে। তাদের অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার এ প্রকল্পের মূল উদ্যোক্তা পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুক্তির আলো নামে একটি প্রকল্পে তাদের এ আলো দেখানো হচ্ছে। তাদের চলচ্চিত্র ও বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালে পরিচিত তারকাদের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। যৌনকর্মীদের রূপালি পর্দায় আনার এ প্রকল্পটি মূলত তাদের পুনর্বাসনের জন্যই গঠিত। যেসব যৌনকর্মী তাদের এ পেশা ছেড়ে দিতে আগ্রহী, কেবল তাদেরই এ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এ প্রকল্প বিষয়ে সুষ্মিকা নামে একজন যৌনকর্মী জানান, ‘আমি যৌনকর্মী হিসেবে মাসে ১৮ হাজার রুপি করে উপার্জন করি। আমি অভিনয়ে আগ্রহী। এটি আমার স্বপ্নও বটে। কিন্তু আমার পরিবারের জন্য দিনশেষে কিছু অর্থও দেওয়া লাগে। আমার বাচ্চা ও মা রয়েছে। তাদের দেখাশোনা করতে হয়।’ এ বিষয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, এর আগে অনুরূপ প্রকল্পের আওতায় যৌনকর্মীদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছিল। সে সময় যৌনকর্মীদের সেলাই ও বিভিন্ন কারিগরি কাজ শেখানো হয়। কিন্তু সে প্রকল্পে যৌনকর্মীদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। এবার আশা করা হচ্ছে যৌনকর্মীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে। এ প্রকল্পে যৌনকর্মীদের প্রতি মাসে আড়াই হাজার রুপি করে টাকাও দেওয়া হচ্ছে।