স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা: ময়নাতদন্ত ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক-মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপনের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে১১টার দিকে নিহত দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, শ্বশুর ডা. জালালুর রহমান ও বন্ধু আজিজুল ইসলাম ওয়ালি মরদেহ গ্রহণ করেন।
আজিজুল ইসলাম ওয়ালি জানান, প্রথমে মরদেহ পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারের বাসায় নেওয়া হবে। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে আজিমপুর গোরস্তানে দাফন করা হবে।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান।
এর আগে রোববার (০১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ফরেনসিকের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী আবু শাসা ময়নাতদন্ত শেষে জানান, ময়নাতদন্ত শেষে দীপনের শরীরে ৪টি আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির মাথাসহ ঘাড় সংযুক্ত মোট চারটি আঘাত রয়েছে। আঘাতের ধরণ দেখে মনে হয় ঘাড় থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে হত্যাকারীরা।
তিনি আরও বলেন, আঘাতের ধরণ দেখে মনে হয় এরা হত্যা করার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। এছাড়াও তার শরীরে ধস্তাধস্তির আরও ছোটখাট কয়েকটা আঘাত রয়েছে।
এসময় বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী আবু শাসার সঙ্গে প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
ময়নাতদন্তের আগে মৃত ব্যক্তির সুরহতাল প্রতিবেদন তৈরি করেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-অপারেশন) শাহীন ফকির।
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির বাম কান থেকে ঘাড় হয়ে ডান কান পর্যন্ত মাথার পেছনে এবং মাথার বামপাশে রক্তাক্ত কাটা জখম রয়েছে। এছাড়াও ডান কাঁধে সামান্য একটি কাটা দাগ রয়েছে।
শনিবার রাজধানীর শাহবাগে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক-মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে। শাহবাগের আজিজ মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতির অফিস থেকে সন্ধ্যায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, আমরা দুপুরে টেলিভিশনে শুদ্ধস্বরের প্রকাশকের ওপর হামলার খবর পেয়ে দীপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। ছেলের বউও যোগাযোগ করেন। কিন্তু কেউই তাকে পাচ্ছিলেন না। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওর স্ত্রীসহ আমরা এসে দেখি রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে আছে।
জাগৃতি প্রকাশনীর ম্যানেজার আলাউদ্দিন জানান, তার গলার পেছনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে।
তিনি জানান, শাহবাগ আজিজ মার্কেটের তৃতীয় তলায় ১৩২ নম্বর রুমে একাই ছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা ঢুকে তার ওপর হামলা চালায়। তবে কয়জন ছিল তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
এদিকে ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে শনিবার রাতে বিবৃতি দিয়েছে আনসার আল ইসলাম নামের একটি জঙ্গি সংগঠন।