উম্মুল ওয়ারা সুইটি
আজ বাংলাদেশে আসছেন নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্ল–ম বার্নিক্যাট। বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনার স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। গত বছরের মে মাসে তার নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচন নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জরুরি ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে অংশগ্রহণ করা দরকার।
এদিকে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে দেশের চলমান অস্থিরতায় নতুন এই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা কি হবে তা নিয়েও কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক মহল উদগ্রীব।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পদে গত ২২ মে বার্নিক্যাটকে মনোনীত করেন। এরপর মনোনীত ব্যক্তি মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে ওই কূটনীতিকের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়। ১৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সময় রাত ৮টা ২১ মিনিটের কিছু আগে কণ্ঠভোটে মার্কিন সিনেটে আরো চারজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বার্নিকাটের প্রস্তাবটিও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির শুনানিতে দেয়া বক্তব্যে বার্নিক্যাট আরও বলেছিলেন, তাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নির্বাচন করলে তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে কাজ করবেন। তিনি বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক উল্লেখযোগ্য সময়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রে যুক্তরাষ্ট্রকে সেবা প্রদানের জন্য মনোনীত হওয়া একটি সম্মানের বিষয়।
বার্নিকাট বলেছিলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচন নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে গঠনমূলক সংলাপে অংশগ্রহণ করা দরকার যা আরো প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, রাজনৈতিক সহিংসতা ও নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে জবাবদিহিতার প্রসার এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্র শক্তিশালী করার প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করতে কঠিন পরিশ্রম করবো। আমি সরকার, সুশীল সমাজ ও সব শ্রেণীর বাংলাদেশীর সঙ্গে কাজ করবো যাতে সবচেয়ে বিস্তৃত ও ন্যায়সঙ্গত অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। আমি আন্তরিকভাবে মানবাধিকার ও বৈচিত্র্যতার প্রতি শ্রদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রসারের সুযোগ, সহিংসতা দ্বারা কলঙ্কিত নয় এমন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক মতপার্থক্যের আলোচনা এবং একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা দ্বারা আইনের শাসনের প্রতি অনুগত হওয়াসহ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তুলে এমন নীতির প্রচারণা করবো।’
বার্নিক্যাট বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে যারা নৃশংসতা চালিয়েছিল তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে তবে, সেই বিচারকার্য সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হতে হবে। চিত্তাকর্ষক কাজ করা বাংলাদেশি সুশীল সমাজ প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনভাবে কাজ অব্যাহত রাখার অধিকার ও নিজ মতামত উš§ুক্তভাবে তুলে ধরার অধিকারকে সমর্থন করা আমরা অব্যাহত রাখবো।
মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্ল–ম বার্নিকাট বলেন, একইসঙ্গে আমরা স্বীকৃতি জানাই যে, এই এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেকোনো প্রগতিশীল গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামীণ ব্যাংকের অব্যাহত কার্যকরিতা নিশ্চিত করতে ও এর অনন্য প্রশাসনিক কাঠামো সংরক্ষণ করতেও আমরা সরকারকে উৎসাহিত করছি। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৫তম রাষ্ট্রদূত।
(আসময়.কম)