বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ একটি ফোনালাপ নিয়ে আবারো সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গন। গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহর ফোনালাপ নিয়েই এ উত্তেজনা।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দেয়া হলেও বিএনপি তাদের দাবিতে অনড় রয়েছে। তবে শনিবার সন্ধ্যায় দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল দাবি করছে, অমিত শাহর সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো কথা হয়নি। তারা স্বয়ং বিজেপি সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল গুলশানে সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, বুধবার রাতে অমিত শাহ দিল্লি থেকে নেত্রীকে ফোন করেছিলেন। তিনি খালেদার অসুস্থতার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। খালেদা জিয়াও তাকে ধন্যবাদ জানান। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও একই দাবি করা হয়।
শনিবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে সেই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন মারুফ কামাল।
কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ দাবি করেছেন, তারা খবর নিয়ে দেখেছেন এই ফোনের দাবি ‘ডাহা মিথ্যা’। তিনি বলেন, তারা জেনেছেন দিল্লি থেকে কোনও ফোন তো আসেইনি, বরং বিএনপির তরফেই দিল্লিতে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু অমিত শাহকে পাওয়া যায়নি। অমিত ও খালেদার মধ্যে কোনও কথাবার্তাও হয়নি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমি নিজে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, বিএনপি নিজেরাই ঢাকা থেকে চেষ্টা করেছিল জনাব অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলার জন্য, কিন্তু কথা হয়নি।’
গত ৮ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসি থেকে জাহিদ এফ সরদার সাদী নামে এক ব্যক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বৈদেশিক দূত পরিচয়ে দাবি করেন, মার্কিন প্রতিনিধি সভার অধিবেশনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিনি পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠান। সাদী বাংলামেইলেও এ সংবাদের ইমেইল পাঠিয়েছিলেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খালেদা জিয়াকে যেভাবে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করা হয়েছে, তার ছেলে তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেয়া হচ্ছে না, মার্কিন সংসদের ওই কমিটি তাতে গভীর উদ্বিগ্ন। তারা বাংলাদেশ সরকারের এই আচরণের নিন্দা করছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস পত্রিকা এই খবর প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পর শনিবার ওয়াশিংটন থেকে মার্কিন প্রতিনিধি সভার বিদেশ বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছেন, তাদের নামে আগে যে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে তা ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’। এমন কোনও বিবৃতি তাদের কোনও সদস্য প্রকাশ করেনি। এই বিবৃতিতে যা বলা হয়েছে তা-ও ঠিক নয়।
‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ ধরনের জাল বিবৃতি প্রকাশের’ নিন্দা করছে তারা।
এ বিবৃতির পর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। লন্ডনে তারেক রহমানের সহকারী হুমায়ুন কবীরের কাছ থেকে তারা ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পেয়েছিল বলে জানিয়েছে। তবে হুমায়ুর কবীর এখন বলছেন বিষয়টি ‘বিব্রতকর’। বাংলামেইল২৪ডটকম