স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে আসা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বিশ্রামাগার না থাকায় খোলা আকাশের নিচেই মশার কামড় ও চাদর বিছিয়ে রাত্রি যাপন করেন তারা।
রোববার (শনিবার দিনগত) রাত ২টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ি রাখার জায়গায় মাদুর পেতে শুয়ে আছেন ঢামেকে ভর্তি রোগীর স্বজনেরা।
অর্থের অভাবে ভালো কোথায়ও থাকতে পারছেন না তারা। আর থাকবেই বা কিভাবে? কখন কি সংবাদ আসে বা কোন ওষুধ লাগে সে চিন্তা তো সারাক্ষণের।
মায়ের অপারেশন করতে এসেছেন সোহেল। সঙ্গে তার ও ছোট বোনের স্বামী মিলন।
সোহেল বলেন, মায়ের অপারেশন করতে এসেছি। রাতে মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষদের থাকা যায় না তাই বাইরে বসেই রাত পার করছি মাত্র। চিন্তা হচ্ছে মায়ের কি অবস্থা।
তিনি বলেন, এতো বড় হাসপাতাল কিন্ত রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের কোনো বিশ্রামাগার নেই! এটা মেনে নেওয়া যায় না। নেই একটু পানি খাবার ব্যবস্থাও। বাংলাদেশের এই সবচেয়ে বড় হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি রুমের খুবই প্রয়োজন।
বড় বোনকে ডাক্তার দেখানোর জন্য গাজীপুর থেকে এসেছেন মো. জামাল মিয়া। কথা হলো তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে এসেছি বড় বোনকে ডাক্তার দেখানোর জন্য। ডাক্তার একটা টেস্ট করতে দিয়েছেন। কোথায় করাবো ঘুরতে ঘুরতে রাত হয়ে গেলো। তাই রাতটা কাটাতে এই খোলা আকাশের নিচেই চাদর পেতে বসেছি।
তিনি বলেন, হাসপাতালে একটি বিশ্রাম রুম থাকলে সেখানে শুয়ে বসে রাত কাটানো যেত। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই।
জামাল ও সোহেলের মতো প্রতিরাতে শতাধিক মানুষ হাসপাতালের খোলা আকাশের নিচেই কাটাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নিজস্ব ২৫ একর জমিতে একটি ভবন নিয়ে পথচলা শুরু করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
বর্তমানে রয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা কলেজ ভবন, অডিটোরিয়াম, পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র, ছাত্র ও ছাত্রী হোস্টেল, বার্ন ইউনিট ইত্যাদি।
২৮টি বিভিন্ন বিভাগ এবং হাসপাতালে ৪২টি ওয়ার্ডে ২৩৪ জন ডাক্তার, ২০০ জন ইন্টার্নি ডাক্তার, ৫৬০ জন নার্স এবং ১১০০ জন অন্যান্য কর্মচারী নিয়োজিত আছেন রোগীদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে।
প্রায় ১৭০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ জনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে চলতে থাকে ৩য় থেকে ৫ম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কলমে শিক্ষাদান।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এতো কিছু থাকলেও নেই বিশ্রামাগার। রোগীদের কথা ভেবেই একটি বিশ্রামাগার করার দাবি করেন স্বজনরা।