১৮ বিদ্যালয় বন্ধ বিপাকে শিক্ষার্থীরা

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ১০২ নম্বর চরবহেরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে ভেঙে গেছে। এ কারণে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
দেলোয়ার (১০), তামান্না খানম (৯), আবদুল্লাহসহ (৯) ২৫ জন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বই-খাতা হাতে বিদ্যালয়ের আশপাশে প্রতিদিন ঘুরঘুর করে। তাদের আশা, আবার ক্লাসে শিক্ষক আসবেন। নতুন করে ডাকবেন নাম ধরে। হাজিরা হবে। পড়াশোনা হবে। কিন্তু কিছুই হয় না। তারা আসে, আবার ফিরেও যায়।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ১০২ নম্বর চরবহেরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওরা। চার দিন আগে আড়িয়াল খাঁ নদে ওদের বিদ্যালয় ভবন ভেঙে গেছে। এরপর আর ক্লাস হয়নি। এ কারণে ওদের চোখমুখে হতাশা দেখা গেছে।
তবে ফলাফল বিপর্যয় যাতে না ঘটে সে জন্য এক শিক্ষিকার বাড়ির উঠানে চলছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। তবে অন্য আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া একদম বন্ধ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরজানাজাতের এম এস দাখিল মাদ্রাসা ভেঙে গেছে। আরো চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। আরো অন্তত ১৪টি বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ওই বিদ্যালয়গুলোর কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে ভাঙনকবলিত বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিন ধরে পদ্মা নদীর শিবচরের চরজানাজাত ও আড়িয়াল খাঁ নদের বহেরাতলা ও সন্ন্যাসীরচরসহ পাঁচটি ইউনিয়নে ভাঙন আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। এসব এলাকার সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
২৪ নম্বর উত্তর চরজানাজাত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭ নম্বর উত্তর চরজানাজাত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫ নম্বর নারকেল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাসচর বাঁচামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। হুমকির মুখে থাকা বিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগ দ্বিতল ভবন। এগুলোসহ মোট ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়ে শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
চর বহেরাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মমতাজ বেগম বলেন, ‘ভবন নদীতে বিলীনের পর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের আমার ভাড়া বাসার উঠানে ক্লাস নিচ্ছি। অন্যদের শুধু হাজিরা নিচ্ছি।’
২৪ নম্বর উত্তর চরজানাজাত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. সালাম মিয়া বলেন, ‘তিন বছর আগে ৫০-৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই তলা ভবন নির্মাণ হইছিল। সেই ভবন থেকে পদ্মা নদী ৩০০-৪০০ গজ দূরত্বে ভাঙছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীতে বিলীন হতে পারে- এই ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না।’ শিবচর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ধীরেন্দ্র চন্দ্র সিকদার বলেন, ‘মোট ১৮টি বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিকল্প উপায়ে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫