বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক॥
আসন্ন (২০১৪-১৫) অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। আগের কর হারই বহাল থাকছে।
বাজেটকে সামনে রেখে শুল্ক ও কর কাঠামোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো এনবিআরের সর্বশেষ প্রস্তাবনায় এ প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।
তবে এনবিআরের প্রস্তাবনায়, তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়কর হার অপরিবর্তিত থাকলেও করহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে নন-পাবলিক ট্রেডেড (শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়) কোম্পানির ক্ষেত্রে। এসব কোম্পানির করহার সাড়ে ৩৭ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হতে পারে।
বাজেট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটের পর থেকেই করপোরেট কর কমানোর চাপ দিয়ে আসছে। থ্রিজি নিলামের সময়ও সেলফোন কোম্পানিগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে করহার কমানোর দাবি তোলে। বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ী নেতাদের চাপের মুখে করের পরিমাণ কমিয়ে আনার কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। এ বিষয়ে শুরুর দিকে এনবিআর কিছুটা নমনীয় ছিল। কিন্তু রাজস্ব আহরণে ১ লাখ ৪৯ হাজার কোটি টাকার বড় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে মনে করে শেষ পর্যন্ত ওই অবস্থান থেকে সরে আসে এনবিআর। এখন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত হস্তক্ষেপ ছাড়া করপোরেট কর হার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন তারা।
এনবিআরের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের জন্য করপোরেট করের হার ব্যাংক-বীমা, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর ও সিগারেট কোম্পানি ছাড়া অন্য সব নন-লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে আগের ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বহাল থাকবে। ব্যাংক-বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ করহার থাকবে অপরিবর্তিত। মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, মোবাইল ফোন অপারেটরদের ক্ষেত্রে পাবলিকলি হলে ৪০ শতাংশ এবং নন-পাবলিকলি হলে ৪৫ শতাংশ।
এনবিআর সূত্র জানায়, করপোরেট কর নির্ধারণ নিয়ে শুরু থেকেই নানা জটিলতায় ছিল অর্থ মন্ত্রণায়, এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এই করের হার ব্যাংক-বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে কমানোর প্রস্তাব করা হয়। আর এফবিসিসিআই সব ক্ষেত্রে করপোরেট কর কমানোসহ পাবলিকলি ও নন-পাবলিকলি কোম্পানির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা করহার প্রস্তাবনা দেয়। কিন্তু আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা থাকায় তা থেকে সরে এসেছে এনবিআর। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ার হিসাব কষে শেষ পর্যন্ত তা শুধু তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে কমানোর প্রস্তাব করা হয়। এরপরও সরকার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাবে বলে জানিয়েছে এনবিআর। আর ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য খাতে কমানো হলে তা কয়েক হাজার কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াত বলে মনে করছে সংস্থাটি।
বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর.কম