স্পোর্টস ডেস্ক ॥ সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে লিওনেল মেসির আধিপত্য খর্ব করলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ২০০৮ সালের পর আবারো তিনি বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা মর্যাদার খেতাব ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার বা ব্যালন ডি’অর জিততে সক্ষম হলেন।
জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক এবং ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে ২৮ বছর বয়সী এই গোলমেশিন ২০১৩ সালের বিশ্বসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন। ফলে টানা চারবার এই খেতাব জেতা বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসি এবং বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে স্বপ্নের মতো একটা মৌসুম কাটানো ফরাসী উইঙ্গার ফ্রাঙ্ক রিবেরিরও স্বপ্নভঙ্গ হল। এই খেতাব জয়ের পথে রোনালদো ১৩৬৫ পয়েন্ট পান। মেসি পান ১২০৫ পয়েন্ট এবং রিবেরির অর্জন ১১২৭ পয়েন্ট।
ক্লাবের হয়ে বড় কোন ট্রফি না জিততে পারলেও পুরো মৌসুম জুড়ে ফুটবল বিশ্বকে সম্মোহিত করে রেখেছিলেন এই বিশ্বসেরা ফরোয়ার্ড। ক্লাব ও দেশের হয়ে ৫৬ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৬৬ গোল করে অবধারিতভাবে হারানো মুকুট পুনরুদ্ধার করার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। বিশেষ করে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্লে অফ ম্যাচে সুইডেনের বিরুদ্ধে অসামান্য হ্যাটট্রিক করে তিনি পুরো বিশ্বের দৃষ্টি কেড়ে নেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্নের এই খেতাব জয়ের প্রতিক্রিয়ায় আবেগরুদ্ধ রোনালদো বলেন, ‘সবার প্রথমে আমি আমার ক্লাব্ এবং জাতীয় দলের সতীর্থদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের সকলের এই অক্লান্ত প্রচেষ্টা ব্যতীত এটা কখনোই সম্ভব ছিল না। আমি সত্যিই খুবই সুখী। এই অ্যাওয়ার্ড জেতা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। ’
তিনি আরো বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে সবাই এর সঙ্গে যুক্ত। এর জন্য আমি আমার স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধব, আমার পুত্র, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটা অতুলনীয় একটা আবেগময় মুহূর্ত। এর সঙ্গে যুক্ত সবাইকেই আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন ও সুইডেনের তারকা ফরোয়ার্ড জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের জন্য সান্ত্বনার পুরস্কারটি আসে ফেরেঙ্ক পুসকাস ট্রফির মধ্য দিয়ে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০ গজ দুর থেকে করা অসাধারণ গোলটির জন্য তিনি এই পুরস্কারটি পান।
বর্ষসেরা কোচ হওয়ার দৌড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তী কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের স্বদেশী কোচ জার্গেন ক্লপকে পেছনে ফেলেন বায়ার্ন মিউনিখের অবসর নেয়া কোচ জুপ হেইঙ্কেস। অবসর নেয়ার আগে তিনি বায়ার্নকে বুন্দেসলিগা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং জার্মান কাপের শিরোপা এনে দেন।
জার্মানির ৩৫ বছর বয়সী গোলরক্ষক ন্যাদাইন অ্যানজেরার ২০১৩ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নরওয়ের বিরুদ্ধে অসাধারণ দুটি পেনাল্টি সেভ করে বর্ষ সেরা নারী ফুটবলার হিসেবে মনোনীত হন।
এক নজরে অন্যান্য পুরস্কারজয়ীরা-
ফেরেঙ্ক পুসকাস অ্যাওয়ার্ড: জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ
ফিফা ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড: আফগানিস্তান
বর্ষসেরা কোচ: জুপ হেইঙ্কেস(বায়ার্ন মিউনিখ)
বর্ষসেরা নারী কোচ: সিলভিয়া নেইড(জার্মানি)
বর্ষসেরা নারী ফুটবলার: ন্যাদাইন অ্যানজেরার(জার্মানি)
ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশ:
গোলরক্ষক:ম্যানুয়েল ন্যয়ের(বায়ার্ন মিউনিখ, জার্মানি)
ডিফেন্ডার: দানি আলভেজ(বার্সেলোনা, ব্রাজিল), ফিলিপ লাম(বায়ার্ন, জার্মানি), থিয়াগো সিলভা(প্যারিস সেইন্ট জারমেইন, ব্রাজিল), সার্জিও র্যামোস(রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন)
মিডফিল্ডার: জাভি হার্নান্দেজ(বার্সেলোনা, স্পেন), আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা(বার্সেলোনা, স্পেন), ফ্রাঙ্ক রিবেরি(বায়ার্ন, ফ্রান্স)
ফরোয়ার্ড: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো(রিয়াল মাদ্রিদ, পর্তুগাল), জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ(প্যারিস সেইন্ট জারমেইন, সুইডেন), লিওনেল মেসি(বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা)