চার কোটি শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় আটকে গেছে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ। বছর শুরু হলেও ক্লাস কবে, কীভাবে শুরু হবে, তা নিয়ে সারা দেশে রয়েছে উৎকণ্ঠা।

সরকারি হিসাবে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন কোটি ৭৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭২। বার্ষিক পরীক্ষার ফল নিয়ে তারা উঁচু ক্লাসে উঠেছে, প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বই পেয়ে ক্লাসে বসার স্বপ্ন দেখছে। এদের হাতে পৌঁছে গেছে ২৯ কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৮ কপি বই।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অভিভাবকেরা সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। শিক্ষকেরাও শিশুদের স্কুলে উপস্থিত হতে বলছেন না। সবাই তাকিয়ে আছেন সরকার ও বিরোধী দলের দিকে। সবার আশা, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

এই সমঝোতা কবে? এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয় বর্তমান ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এই পরিস্থিতির অবসান কবে, কীভাবে হবে তা বলা মুশকিল। তবে শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেয়েছে, বিদ্যালয়ে যেতে চায়। তাদের উৎসাহ ধরে রাখতে লেখাপড়া পুরোদমে চালু করতেই হবে। অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী আশাবাদী যে, হরতাল-অবরোধ ডাকলেও রাস্তায় যানজট হচ্ছে। প্রয়োজনের তাগিদেই শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কেউ চাইবে না, বিএনপিও চায় না। কিন্তু টানা আন্দোলন ছাড়া বিরোধী দলের সামনে কোনো বিকল্প নেই। কারণ, রাজনৈতিক সংকট ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ সরকারই সৃষ্টি করেছে। সরকার আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি সামনে এনে রাজনীতি করছে।

শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলছেন, তাঁরা রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়তে চান না। গত বছর পাঠ্যবই পুরোপুরি পড়ানো যায়নি, অনেক প্রতিষ্ঠানে আংশিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং সরকারি ছুটি হিসাব করে দেখা গেছে, বিদায় বছরে ২০০ দিনেরও বেশি বন্ধ ছিল অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতার মধ্যে একটা প্রতিকূল অবস্থায় শেষ হয়েছে চারটি পাবলিক পরীক্ষা, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা এবং উচ্চশিক্ষার ভর্তি পরীক্ষা। নতুন বছরেও এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ মিলবে কি না, তা নিয়ে হতাশ শিক্ষক-অভিভাবকেরা। তাঁদের এই হতাশার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠনগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, ‘লেখাপড়া নিয়ে এত হতাশ আগে কখনো হইনি। এত বেশি অসহায় কখনো বোধ করিনি। আমরা নীরব দর্শক, এখন শুধু শিশু-কিশোরদের মঙ্গল কামনা করতে পারি।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, আগে যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে পরীক্ষার বিষয়টি অন্তত চিন্তা করা হতো। এখন এই চিন্তাও কেউ করে না। তবে চূড়ান্তভাবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের।

এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিষয়টি এখন অভিভাবকদের মুখে মুখে। তাঁরা জানতে চাইছেন শিক্ষার ভবিষ্যৎ কী! একটি বেসরকারি ব্যাংকের মিরপুর শাখার কর্মকর্তা রুবিনা আকতার খানম বলেন, তাঁর মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধানমন্ডি শাখায় পড়ে। কবে ক্লাস শুরু হবে জানেন না, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর সাহস পাচ্ছেন না তিনি।

শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলছেন, তাঁরা রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়তে চান না। গত বছর পাঠ্যবই পুরোপুরি পড়ানো যায়নি, অনেক প্রতিষ্ঠানে আংশিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং সরকারি ছুটি হিসাব করে দেখা গেছে, বিদায় বছরে ২০০ দিনেরও বেশি বন্ধ ছিল অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হরতাল, অবরোধ ও সহিংসতার মধ্যে একটা প্রতিকূল অবস্থায় শেষ হয়েছে চারটি পাবলিক পরীক্ষা, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা এবং উচ্চশিক্ষার ভর্তি পরীক্ষা। নতুন বছরেও এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ মিলবে কি না, তা নিয়ে হতাশ শিক্ষক-অভিভাবকেরা। তাঁদের এই হতাশার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠনগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, ‘লেখাপড়া নিয়ে এত হতাশ আগে কখনো হইনি। এত বেশি অসহায় কখনো বোধ করিনি। আমরা নীরব দর্শক, এখন শুধু শিশু-কিশোরদের মঙ্গল কামনা করতে পারি।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, আগে যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে পরীক্ষার বিষয়টি অন্তত চিন্তা করা হতো। এখন এই চিন্তাও কেউ করে না। তবে চূড়ান্তভাবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫