জেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ॥ বাহুবল উপজেলার মীরপুরে ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে শিবিরকর্মীর কথা কাটাকাটির জের ধরে বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের দফায় দাফায় সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় অন্তত ১৫টি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নানকে (৩৫) সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, আরও ১০ জনকে হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লারর রিভিউ আবেদন খারিজ করে ফাঁসি বহাল রাখার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মীরপুর চৌহমনীতে শিবির কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় মিছিলকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা পল্লবের কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা মীমাংসা করার উদ্যোগ নেন।
এর কিছুক্ষণ পর যুবলীগের এক অংশ দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে মীরপুর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। অপর দিকে, যুবলীগ নেতাকর্মীদের জড়ো হওয়ার খবর জানতে পেরে বিএনপি জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা আরও সংঘটিত হয়।
একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষকালে চৌহমনীর বিসমিল্লাহ সুইট মিটস, স্মৃতি-প্রীতি স্টোরসহ প্রায় ১৫টি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে বাহুবল থানা পুলিশ ও পরে হবিগঞ্জ থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে একদল দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সংঘর্ষে পুলিশের রাবার বুলেট ও ইটপাটক্ষেলের আঘাতে বাহুবল উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান নানুসহ (৩৫) পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া, উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল হান্নান নানুকে রাতেই সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া, আহত উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনুসহ কয়েকজনকে হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার দক্ষিণ মোজাম্মেল হক জানান, সংঘর্ষে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৮৯ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।