জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর ॥ প্রধানমন্ত্রীর সদ্য উদ্বোধন করা চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আসতে পারছে না এই পাওয়ার প্লান্টটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার দু’দিন আগে থেকেই কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে বাহবা নেয়ার জন্য চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়।
এয়ারকুলারে বালি জমে ফিল্টার অকেজো হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে বলে একটি সূত্র জানায়। তবে খোদ ম্যানেজারের দাবি গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এদিকে নতুন ফিল্টার স্থাপন করা হলেও উৎপাদনে আসতে পারছে না পাওয়ার প্লান্টটি। তবে কতদিন পর কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসবে তা বলতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা। গত ১৬ নভেম্বর উৎপাদন বন্ধ প্রকল্পটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে পুরো জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল চাঁদপুর শহরের গুণরাজদী বালুর মাঠে ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘চায়না চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড’ নামে চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এটি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা থাকলেও ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করে। প্রথমদিকে প্রতিদিন ১শ’ ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। পরবর্তীতে স্ট্রিম টারবাইনের মাধ্যমে বাড়িয়ে ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডেও যোগ হয়।
গত ১৪ নভেম্বর থেকে সর্বশেষ উৎপাদিত ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টরা জানায়, কারিগরি ত্রুটি ও এয়ারকুলারের সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ জেনারেশন করতে পারছে না।
এদিকে প্রকল্পের ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম জানায়, গ্যাস সংকটে বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। একাধিকবার বাখরাবাদ গ্যাসের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও গ্যাস পাচ্ছি না। তবে কবে নাগাদ চালু হবে তাও বলতে পারছেন না প্রকল্পের ম্যানেজার। অপরদিকে, চায়না এ প্রতিষ্ঠানটি তাদের দেখভালের দায়িত্ব ইতোমধ্যে পাওয়ার ডেভেলাপমেন্ট বোর্ডকে (পিডিবি) দেয়ার কথা থাকলেও ত্রুটির কারণে তা পারছে না বলে জানা গেছে। তবে কোম্পানিটি আরও দু’বছরের জন্য তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নবায়ণ করতে চায়। আগামী মার্চে নবায়ণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বর্তমান শীত মৌসুমে জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত চাহিদা না থাকায় এ প্রকল্পের উৎপাদন নিয়ে তেমন তৎপরতা নেই কর্তৃপক্ষের।