আবারো হরতাল!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা ৮৪ ঘণ্টা হরতাল শেষে বুধবার রাতে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অফিস করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় দলের নীতিনির্ধারক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। বৈঠকে আগামী হরতালের তারিখ চূড়ান্ত করা হতে পারে। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসা ও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসার আশাপাশে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে অঘোষিতভাবে তাকে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের আসা যাওয়ায় বাধা প্রদান করা হচ্ছে। খাবার ও পানি সরবরাহে বাধা দেয়া হচ্ছে। এমন গুঞ্জন রয়েছে, সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাসা থেকে বের হলেই খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার পায়ে সমস্যা রয়েছে। গাড়ি ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। তাকে গুলশান অফিসে যেতে হলে গাড়িতে যেতে হবে। আর তাতে হরতাল ভঙ্গ হবে। তাই হরতালে চেয়ারপারসন বাসা থেকে বের হন না। হরতাল শেষে কার্যালয়ে যাবেন তিনি।

আবারও হরতাল!

আবারও হরতাল আসছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আগামী সপ্তাহে আবারও হরতাল দিতে যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বধীন ১৮ দলীয় জোট। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও তেমনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসভবনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী ও বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তারা হরতাল প্রত্যাহারের আবেদন জানান।

সাক্ষাৎ শেষে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘হরতাল প্রত্যাহারের বিষয়ে খালেদা জিয়া স্পষ্ট করে বলেছেন, সরকার পদক্ষেপ নিলে তৎক্ষণাত হরতাল প্রত্যাহার করবো।’

কেমন পদক্ষেপ, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন, শুধু মন্ত্রিপরিষদ পদত্যাগ করলেই হবে না। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেই তৎক্ষণাত হরতাল প্রত্যাহার করবো।’ বেগম জিয়ার কথার সঙ্গে নিজেও একমত বলেও জানান কাদের সিদ্দিকী।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার হরতাল শেষে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে হরতালের তারিখ চূড়ান্ত করবেন। তবে আত্মগোপনে থাকা নেতারা পুলিশি নজরদারির কারণে কার্যালয়ে আসতে না পারলে একাই সিদ্ধান্ত নেবেন বেগম জিয়া।

এর আগে রোববার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার হয়রানির পরেও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে অনড় রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।’

দলের নীতি নির্ধারকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ম্যাডাম বলেই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যগ করলেই হরতাল প্রত্যাহার করা হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা হলে শুধু হরতাল নয়, সব কমসূচি স্থগিত করে ১৮ দলীয় জোট নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনোনিবেশ করবে। অন্যথায়, যতদিন সরকার দাবি না মানবে ততোদিন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, ‘হরতাল শেষে বুধবারই কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। তবে গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ পাঁচ নেতার শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। শুনানিতে কী হয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তাদের জামিন না দেয়া হলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে রোববার থেকে বুধবার সারাদেশে আবারও টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল দেয়া হতে পারে।’

হরতাল প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ বলেন, ‘সরকার যদি নমনীয় না হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহে হরতাল ও অসহযোগ আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা করা হবে। তবে দলের নীতি নির্ধারণী সভায় কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।’

তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার দলের ৫ শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর অন্য নেতারা চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। গ্রেপ্তার এড়াতেই তারা এ কৌশল অবলম্বন করেছেন।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার নির্দলীয় সরকারের দাবিতে তৃতীয় দফা হরতাল ঘোষণার সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক এবং শুক্রবার ১৮ দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে আগামীতেও কঠোর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫