স্পোর্টস ডেস্ক ॥ নাঈম ইসলাম প্রথম শ্রেণীর খেলা শুরু করেন ২০০৪ সালে। এর ৪ বছর পর ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়। এরপর ৫ বছরে খেলেছেন মাত্র ৮টি টেস্ট ম্যাচ। হাঁকিয়েছেন একটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটিও। অন্যদিকে একই বছর ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার পর থেকে ৫৬টি ওয়ানডে ম্যাচে খেললেও নেই কোন সেঞ্চুরি। ঝুলিতে জমা পড়েছে ৫টি ফিফটি। অন্যদিকে একটা সময় তার নামের পাশে প্রায়ই সেঁটে গিয়েছিল ছক্কা শব্দটি। এক ওভারে ছয়টি ছক্কা হাঁকানোর পর থেকে তাকে ধরে নেয়াই হয়েছিল টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডে ব্যাটসম্যান। কিন্তু না সর্বশেষ ২০১২ সালে নিজের ৭ম টেস্ট ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলে সুযোগ পেয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে জানান দেন তিনি টেস্টেও ব্যাট চালাতে জানেন। তবে এ বছর দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি। তবে ওয়ানডেতে নেমেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন আবারও। ৩ ম্যাচে ৫৪.৩৩ গড়ে করেছেন ১৬৩ রান। হাঁকিয়েছেন ২টি ফিফটিও। আর ঘরোয়া লীগে কলাবাগান কেসির হয়ে সর্বশেষ দুই ম্যাচে হাঁকিয়েছেন ২টি ফিফটি। তবে তার মনের কোণে এখনও আক্ষেপ রয়ে গেছে টেস্ট ম্যাচ খেলতে না পারার। সেই কথোপকথনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: খুব ভাল সিরিজ কাটলো, ঘরোয়া লীগেও ভাল করছেন। সব মিলিয়ে নিজের বর্তমান পারফরমেন্সের মূল্যায়ন কিভাবে করছেন?
নাঈম: আমার খুবই ভাল লাগছে যে, ধারাবাহিকভাবে ভাল করতে পারছি। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, ভাল করতে পারবো। মাঠে চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দেয়ার। নিজের কথা ভাবিনি, দলের জয়ে কিভাবে অবদান রাখতে হবে- সেটাই চিন্তা করেছি।
প্রশ্ন: এই সিরিজে বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশ দেখেছেন বলে মনে করেন কি?
নাঈম: অবশ্যই, আগের তুলনায় দলের ক্রিকেটাররা এখন অনেক পরিশ্রম করেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো সবার মাঝে এখন আত্মবিশ্বাসটা খুব বেশি। মাঠে দলের জন্য কিছু করার যে চেষ্টা তা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
প্রশ্ন: ওয়ানডে সিরিজ থেকে ঘরোয়া লীগ পর্যন্ত ৪টি ফিফটি। সর্বশেষ ৮৬ রানে অপরাজিত। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে দূরে থাকতেই থেমে যাওয়া। এটাকে মানসিক প্রতিবন্ধকতা মনে করেন?
নাঈম: না, আমি আসলে সেই ভাবে দেখছি না। আপনি যদি খেয়াল করেন দেখবেন আমি দলের প্রয়োজনে খেলেছি। দলের রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাট করেছি। এমনকি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও তাই হয়েছে। আমি সত্যি বলতে নিজের সেঞ্চুরি করার কথা চিন্তা করে খেলিনি। তবে সুযোগ পেলে সেটাও হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: ৫ বছরে মাত্র ৮টি টেস্ট। টেস্ট খেলতে না পারার কোন আক্ষেপ আছে কি?
নাঈম: সত্যি কথা আক্ষেপতো আছেই। বেশি বেশি টেস্ট খেলতে পারলে নিজেরই উন্নতি হবে। তাই সুযোগের অপেক্ষায় আছি।
প্রশ্ন: ক্রিকেটে অনেক উত্থান-পতন ছিল। পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছেন কতটা?
নাঈম: আমি সব সময় পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি। আমার বাবা-মা, ভাইবোন, স্ত্রী প্রিয়াংকা সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। বিশেষ করে আমার স্ত্রী আমাকে বেশ সাপোর্ট দেয়। তবে ওর ক্রিকেট নিয়ে তেমন কিছু বলার থাকে না। তাই আমার কাজটা আমি ঠিকমতো করতে পারি।
প্রশ্ন: ঢাকায় কি পরিবারের সবার সঙ্গে থাকেন?
নাঈম: না, আমার মা-বাবা গাইবান্ধায় থাকেন। আমি আমার স্ত্রী প্রিয়াংকাকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। ও পড়ালেখা করছে, বিবিএ শেষ করেছে।
প্রশ্ন: সামনে লক্ষ্য কি?
নাঈম: একটাই, ভাল ক্রিকেট খেলা। সুযোগ পেলে দলের জন্য সেরা খেলা উপহার দেয়া। সেটা জাতীয় দলেই হোক আর ঘরোয়া ক্রিকেটে হোক ভাল করতে চাই। এছাড়াও নিজের ফিটনেস ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।