স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনর্বহালে ১৮ দলের তৃতীয় ও শেষ দিনের হরতালও সহিংসতার মধ্যদিয়ে চলছে। দেশজুড়ে সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার সকালে পিকেটারদের ককটেলে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
ধানমন্ডি এলাকায় কয়েকজন পিকেটার জড়ো হলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাদের ধাওয়া দেন ওসি মাইনুল। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে পিকেটাররা ককটেল নিক্ষেপ করলে ওসি আহত হন।
কাঁঠালবাগান এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সকালে রাজধানীর ব্যস্ততম ফার্মগেট এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভোরে তেজগাঁও কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে ভাঙচুর ও আগুন দেয় পিকেটাররা। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
হরতাল সমর্থনে মিছিল করেছে বংশাল ও সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দল। তেজগাঁও হরতাল সমর্থনে শ্রমিকদলের মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের তৃতীয় দিনের শুরুতে সকালে রাজধানীর মাতুয়াইল, ধোলাইপাড় ও ধুপখোলায় মিছিল ও পিকেটিং করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। এ সময় পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে তারা।
ওয়ারী ও সূত্রাপুর থানা ছাত্রশিবির সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল লাইনের সায়দাবাদ রেল ক্রসিং পয়েন্টে অগ্নিসংযোগ করে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা মহানগর জামায়াতের রমনা থানার উদ্যোগে মগবাজার চৌরাস্তা থেকে হরতাল সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরে সমাবেশে মিলিত হয়।
নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভুলতা ইউনিয়ন অফিস কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভোর ৩টার দিকে অগ্নিংযোগের ঘটনায় অফিসের আসবাবপত্র পুড়ে গেলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ফতুল্লায় হরতাল সমর্থনে স্বেচ্ছসেবক দলের মিছিলে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়। এছাড়া কেল্লাপুরে ট্রাক ও টেম্পুতে আগুন দিয়েছে পিকেটাররা।
মেহেরপুরে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে, সহিসংতা এড়াতে জয়পুরহাট, বাগেরহাটের শরণখোলায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়, পাবনার ইশ্বরদী মুলাডুলি ও দাশুড়িয়ায় এবং চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এ সব এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে জয়পুরহাটে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনর্বহালে বিরোধী জোট ১৮ দলের টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দুদিন রবি ও সোমবার দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি, আওয়ামী লী ও জামায়াতে নেতাকর্মীসহ অন্তত ১১ জন নিহত হয়।