ভিয়েতনামে পৃথিবীর বৃহত্তম ও ভয়ংকর গুহা

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আদিম যুগে মানুষ বসবাসের জন্য একমাত্র নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে বেছে নিত গুহাকে। সভ্যতার পরিবর্তনে মানুষ এখন আর গুহায় বসবাস করেনা। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারও পাহাড় পর্বতে ঢাকা নানা ধরনের গুহা। এর মধ্যে কিছু গুহা আকারে ছোট আবার কিছু আকারে অনেক বড়। এ বড় গুহা গুলো শুধু মাত্র আকারেই বড় নই এগুলো আবার সাংঘাতিক ও ভয়ংকর হয়ে থাকে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও ভয়ংকর গুহার তালিকায় সবার শীর্ষে হ্যাংসন ডুং।

ভিয়েতনামের কোং বিন প্রদেশের বো টাচ জেলায় এই গুহা নেটওয়ার্কের অবস্থান। এটিকে আবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহা নেটওয়ার্ক বলা হয়ে থাকে। ১৯৯১ সালে গুহাটি আবিষ্কৃত হয়। গুহাটি প্রথম আবিষ্কার করেন সেখানের স্থানীয় এক ব্যক্তি, যার নাম হো-খানহ।

ব্রিটিশ গুহা গবেষণা সংগঠনের প্রধান হাওয়ার্ড ও ডেভ লেমবার্ট ১০-১৪ এপ্রিল ২০০৯ সালে বিশ্বের বৃহত্তম এই গুহা নেটওয়ার্কের আয়তন ও প্রশস্ততা পরিমাপ করতে সমীা শুরু করেন। কিন্তু তাদের পর্যবেণ একটি বড় ক্যালসাইট পাঁচিলের কারণে থেমে যায়। এ গুহার সবচেয়ে বড় কটির পরিমাপ ২০০ মিটার উচ্চ এবং ১৫০ মিটার চওড়া, যা মোট ৫.৬ কিলোমিটার। হ্যাংসন ডুং গুহাটি আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ গুহা হিসেবে মালয়েশিয়ার ডির গুহার স্থান দখল করে নেয়। ভিয়েতনামের জাতীয় উদ্যান ফুং না কিং ব্যাংয়ের পাশেই হ্যাংসন ডুংয়ের অবস্থান। রহস্যময় গুহাটি প্রায় ১৫০টি গুহার সমন্বয়ে গঠিত। মজার ব্যাপার হল গবেষক দল গুহাটির আয়তন পরিমাপ করতে পারলেও এর শেষ খুঁজে বের করতে পারেননি। ২০০৯ সালে হাওয়ার্ড, রিমটি ফুং না কি ব্যাং ন্যাশনাল পার্ক থেকে এই গুহা আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন।

আর এ গুহাটি বিপদজ্জনক হওয়ার কারণ হল, গবেষণা দল গুহা আবিষ্কারের সময় সম্মুখীন হন নানা বিপদ-আপদের। তারা গুহার মধ্যে পান বিষধর সাপ, বড় মাকড়সা, অদ্ভুত সব প্রাণী ও অজানা-অচেনা বৃরাজি। তারা গুহার মধ্যে দেখতে পান ছোট ছোট পানির ফোয়ারা। গুহার মধ্যে রয়েছে অনেক সুড়ঙ্গপথ, যেসব পথ দিয়ে অতি সহজেই ভিয়েতনামের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাতায়াত করা যায়।

গুহার মধ্যে পানির ফোয়ারা ছাড়াও রয়েছে একাধিক জঙ্গল। দূর থেকে দেখতে হ্যাংসন ডুংকে দোতলা বাসের মতো মনে হয়। যে কারণে হ্যাংসন ডুং অতি আকর্ষণীয় গুহা হিসেবে বিবেচিত। প্রথম দিকে এ গুহা এলাকার দিকে স্থানীয় লোকজন আসতে ভয় পেত, কারণ তারা এই গুহার তলদেশের নদী থেকে উচ্চস্বরে শব্দ শুনতে পেত। গুহাটি আবিষ্কারের পর এখনও এটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত নয়। কারণ এই গুহাটি অত্যন্ত ভয়ানক। এখানে পৃথিবীর অন্যতম মারাত্মক সব জীবজন্তু ও পোকামাকড়ের আবাস।

ব্যতিক্রমর্ধী এ গুহাটি হ্যাংসন ডুং গুহার ভেতরটা আলাদা একটি জগত। যে সব ফটোগ্রাফার এ গুহার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলেন তারা জানিয়েছেন, গুহার ভেতরে থাকাকালে ভেবেছিলেন তারা পৃথিবী থেকে আলাদা কোনো স্থানে চলে এসেছেন। জার্মানির বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার ক্যারিস্টেন ২০১০ সালে ছবি তোলার জন্য এ গুহার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। তিনি গুহা থেকে বাইরে এসে বলেন, তিনি সেখানে দুই সপ্তাহ অবস্থান করেন, এ সময়ে তিনি সেখানে ঘুমানোর সময় স্লিপিং ব্যাগে ঘুমাতেন, তিনি সর্বদা ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকতেন এবং ভাবতেন তিনি পৃথিবী থেকে আলাদা কোনো স্থানে চলে এসেছেনে।বি.পি, এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫