বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে ফের কর্মবিরতিতে যাচ্ছে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। বুধবার বিকাল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষক ফোরাম আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেয়। এই সময়ের মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। ফোরামের সদস্য সচিব অধ্যাপক কামরুল আহছান এই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন, ক্লাস ও ঘোষিত পরীক্ষা বর্জন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে ১ অক্টোবর থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।তবে চলমান পরীক্ষা হবে। সংবাদ সম্মেলনে কঠোর কর্মসূচির বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহনের দায়িত্ব শিক্ষক ফোরামের আহবায়ক কমিটির ওপর হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সাধারণ শিক্ষক ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক হানিফ আলী, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক আমীর হোসেন, কলা ও মানবিক অনুষদের ডীন অধ্যাপক সৈয়দ কামরুল আহছান টিটো, অধ্যাপক নুরুল আলম, অধ্যাপক আবুল হোসেন, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাধারণ শিক্ষক ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক হানিফ আলী বলেন, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন একজন মিথ্যাবাদী ও বিতর্কিত ব্যক্তি। তাঁর আচরণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ কারণে তাঁর পদত্যাগ করতেই হবে। তিনি আরো বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম, কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত উপাচার্যের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাই আমরা স্বাভাবিক কর্মসূচিতে ফিরে এসেছি। এর আগে বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে সাধারণ শিক্ষক ফোরামের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় দেড়শ’ শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত: তদন্ত কমিটির তদন্তে সহযোগিতার জন্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি কোন ফলাফল ঘোষণা না করায় শিক্ষক ফোরাম আবারো নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলো। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের মন্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক লাঞ্চনার বিচার না করা, শিক্ষকদের সম্পর্কে কটূক্তি, মিডিয়ায় বিতর্কিত বক্তব্য, ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, ২০১২ সালের ১ ও ২ আগস্ট এবং ১২ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ভাঙচুরের ঘটনা, পহেলা বৈশাখে ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা, শিক্ষক লাঞ্চনার বিচার, ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়ম, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-দৃশ্য নষ্টসহ ১২ টি অভিযোগ এনে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাঁর পদত্যাগের জন্য আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। এ জন্য সংগঠনটি এর আগে উপাচার্যকে চারদিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে। সর্বশেষ বুধবার আবারো তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিলো।