স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্টোবর মাসে মহার্ঘভাতা প্রদান করা হবে। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত রয়েছে, ২০ ভাগ মহার্ঘভাতা দেয়া হবে। তবে এর একটি সিলিং বা সীমা থাকবে। মূল বেতন যাই থাকুক না কেন, সর্বনিম্ন মহার্ঘভাতা হবে দুই হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ মহার্ঘভাতা হবে পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু এখানে আপত্তি দিয়েছেন সচিবেরা। তারা চাচ্ছেন মূল বেতনের পুরো ২০ ভাগই মহার্ঘ দিতে হবে। বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য সরকারের প থেকে একটি কমিটিও করে দেয়া হয়েছে। তারা কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। ফলে আগামী কোরবানি ঈদের আগে সরকারি চাকুরেদের জন্য মহার্ঘ ঘোষণা দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি মাসের ১২ তারিখে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আগামী মাসেই (অক্টোবর) পে-কমিশনের গেজেট প্রকাশ করা হবে। আর আমরা আগেও বলেছি যে, সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘভাতাও দেয়া হবে। কিন্তু সেটা কবে দেয়া হবে সেই তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এ সরকারের মেয়াদেই মহার্ঘভাতা দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যে পর অক্টোবর মাসে মহার্ঘভাতা দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ে কমিটি করে দেয়া হয়। সেই কমিটি থেকে কয়েকজন সচিবের মতামত নেয়া হয়েছে। এসব সচিব বলেছেন, যদি ২০ ভাগ মহার্ঘভাতা দেয়া হয় তবে তা অবশ্যই বেসিক বা মূল বেতনের ২০ ভাগ হতে হবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের প থেকে আগে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা মহার্ঘভাতা দেয়া হবে। এ হিসাবে সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় কর্মরত প্রায় ১২ লাখ চাকুরের মহার্ঘভাতা দিতে হলে বছরে খরচ পড়বে প্রায় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা। কিন্তু সচিবেরা মত দিয়েছেন, মহার্ঘভাতা যাই দেয়া হোক না কেন তা যেন মূল বেতনের অংশ হিসেবে দেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে কিভাবে মহার্ঘভাতা দেয়া হবে তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকার চাচ্ছে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেন চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ মহার্ঘভাতা ঈদের আগেই দেয়ার চিন্তা রয়েছে। এ জন্য আগামী সপ্তাহে অর্থমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা চাওয়া হবে বলে জানা গেছে। অতীতে মোট সাতটি পে-কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এইগুলো গঠন করা হয়, ১৯৭২, ১৯৭৭, ১৯৮৫, ১৯৯১, ১৯৯৭, ২০০৫ ও ২০০৯ সালে।