স্পোর্টস ডেস্ক ॥ ঢাকা লীগে শুরুতেই ব্যাট-বলে দ্যুতি দেখালেন লঙ্কান তারকা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। আর স্বদেশী তারকা নাজমুস সাদাতের চওড়া ব্যাটিং ও শ্রীলঙ্কা অধিনায়কের চৌকস নৈপুণ্যে আসরে সহজ জয় কুড়ালো তার দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ব্রাদার্সের জয়টি ৬ উইকেটে। আর ২১৪ রানের টার্গেটে ব্রাদার্স জয়টি কুড়ায় ৬.১ ওভার অব্যবহৃত রেখে। চলতি গতকালই ছিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের প্রথম ম্যাচ। আর ব্যাটে ঝলক দেখানের আগে বল হাতে প্রতিপক্ষদের শুরুতে দেখান ক্যারিশমা। ঠা ঠা রোদে ম্যাথিউসের সুইং বলে নাস্তানাবুদ ভিক্টোরিয়া স্কোর বোর্ডে রান জমা করার আগেই হারায় ওপেনার মায়শুকুর আহমেদকে। অপর প্রান্তে বল হাতে গোলা দাগছিলেন ব্রাদার্সের অপর ভিনদেশী রিক্রুট পাকিস্তান পেসার আজহার মেহমুদ। এতে দলীয় স্কোর মাত্র ১১ রানে রেখেই শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানকে হারায় ভিক্টোরিয়া। একে একে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, ও লঙ্কান রিক্রুট শালিকা করুণানায়েকে। জবাবে শুরুটা আরামের ছিল না ব্রাদার্সেরও। দলীয় ৬৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে চিন্তা জমছে তখন ব্রাদার্সের দুই স্টার ভাই অধিনায়ক নাফিস ইকবাল ও জাতীয় তারকা তামিম ইকবালের কপালের ভাঁজে। ওপেনার তামিম ও ওয়ানডাউন নাফিস সাজঘরে ফিরে গেছেন ততক্ষণে। ব্রাদার্স ইনিংসের বয়স তখন ১৭ ওভার। আর এখান থেকেই ব্রাদার্স ইউনিয়ন দিশা খুঁজে পেতে থাকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও স্বদেশী তারকা নাজমুস সাদাতের ব্যাটে। বলের মেধা-গুণ বুঝে কখনও সলিড ডিফেন্স আবার মারকুটে ব্যাটিংয়ে বল মাঠ ছাড়া করছিলেন এ জুটি। ম্যাথিউস-সাদাত এ ধারা অব্যাহত রাখেন ব্রাদার্সের জয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। ব্রাদার্সের পঞ্চম উইকেট জুটিতে এ দু’ব্যাটসম্যান তোলেন অবিচ্ছিন্ন ১৪৮ রান। ৭৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে ম্যাথিউসের বাউন্ডারির মার নেই একটিও, তার চারটিই ছক্কা। ৯৭ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসে ২ ছক্কার সঙ্গে সাদাতের বাউন্ডারি ১০। বল হাতে ২ উইকেট নেন ভিক্টোরিয়ার লঙ্কান তারকা সজীবা বীরাকুন। মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে সকালে টস জিতে ভিক্টোরিয়াকে ব্যাটিংয়ে নেন ব্রাদার্স অধিনায়ক নাফিস ইকবাল। দলীয় ৫৮ রানে অধিনায়ক নাসিরের উইকেট হারিয়ে দিশাহারা ভিক্টোরিয়া শেষ পর্যন্ত লড়িয়ে পুঁজি পায় লেজের ঝাপটায়। শেষ ৪ উইকেটে ভিক্টোরিয়ার স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে ১০৫ রান। ভিক্টোরিয়ার ৭, ৮, ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান শরীফ, সাজেদুল, এনামুল (জুনি.) ও মনির হোসেন করেন যথাক্রমে ৩৩, ২৭, ২৯ ও ১৬ রান। শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাথিউস তার ৯ ওভারের স্পেল শেষ করেন ২৯ রানে। তিন মেডেনে ১০ ওভারের ৩২ রানে আজহার মেহমুদও নেন দুই উইকেট। ব্রাদার্সের অপর লঙ্কান রিক্রুট পেসার সচিত্রা সেনানায়েকেকে উইকেট দেয়ার আগে ভিক্টোরিয়ার হয়ে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরিটি দেখান জুবায়ের আহমেদ। পাঁচ বাউন্ডারিতে জুবায়ের থামেন কাঁটায় কাঁটায় ৫০ রানে। দারুণ কিপটে বোলিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়ে সচিত্রা ১০ ওভারের স্পেলে দেন মাত্র ১৮ রান। আর ম্যাচ শেষে দিনের সেরা নায়কের স্বীকৃতিটা ওঠে ব্রাদার্স ব্যাটসম্যান নাজমুস সাদাতের নামেই। প্রিমিয়ার লীগে নিজেদের তৃতীয় রাউন্ডে এটি ব্রাদার্স ইউনিয়নের দ্বিতীয় জয়। আর তিন রাউন্ড শেষে এক জয়, এক হার ও পরিত্যক্ত ম্যাচের এক পয়েন্ট ভিক্টোরিয়ার একাউন্টে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: ব্রাদার্স, ফিল্ডিং
ভিক্টোরিয়া: ৫০ ওভার; ২১৩/৯ (জুবায়ের ৫০, নাসির ৩৫, মো. শরিফ ৩৩, এনামুল জুনি. ২৯, আজহার মেহমুদ ২/৩২, ম্যাথিউস ২/৩৯, ১/১৮)।
ব্রাদার্স: ৪৩.৫ ওভার; ২১৪/৪ (সাদাত ৮২* ম্যাথিউস ৫৬*, ইমতিয়াজ ২২, নাফিস ২১, তামিম ১৯, বীরাকুন ২/৩৫)।
ফল: ব্রাদার্স ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: নাজমুস সাদাত (ব্রাদার্স)।