বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ আনন্দ ধরে রাখতে পারলেন না নিনা দাভুলুরি। আবেগ, উত্তেজনায় তার চোখ দিয়ে হয়তো নিজের অজান্তেই গড়িয়ে পড়তে থাকে অশ্রু। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তার এই আনন্দ উত্তেজনার কারণ, তিনি নির্বাচিত হয়েছেন মিস আমেরিকা ২০১৪। এবারই এ প্রতিযোগিতায় কোন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ প্রতিযোগিতার শিরোপা জিতলেন। এর আগে সুস্মিতা সেন মিস ইউনিভার্স, ঐশ্বরিয়া রাই মিস ওয়ার্ল্ড, প্রিয়াংকা চোপড়া মিস ওয়ার্ল্ড নির্বাচিত হলেও নিনাই প্রথম কোন ভারতীয় মিস আমেরিকা খেতাব জিতলেন। ২৪ বছর বয়সী এই সুনয়না এখন কমপক্ষে ৫০ হাজার ডলার বৃত্তি পাবেন। তার লক্ষ্য পিতার মতো একজন চিকিৎসক হওয়া। তারপরই যোগ দিতে চান আপস্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির আটলান্টিক শহরে আয়োজন করা হয় এ প্রতিযোগিতা। সেখান থেকে সরাসরি অনুষ্ঠান সমপ্রচার করে এবিসি টেলিভিশন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা সান্ধ্যাকালীন গাউন পরে শোতে অংশ নেন। তাদের লাইফ স্টাইল দেখা হয়। যাচাই করা হয় মোধা। যাচাই করা হয় ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার এবং স্টেজে প্রশ্নোত্তর পর্বে। এ পর্বে নিনাকে প্রশ্ন করা হয় টেলিভিশনে উপস্থাপনা নিয়ে। বলা হয়, আপনাকে যদি টেলিভিশনের উপস্থাপনার দায়িত্ব দিয়ে বলা হয় আপনার অবয়ব পাল্টে দেয়ার জন্য চোখের ওপর প্লাস্টিক সার্জারি করাতে হবে। আপনি কি জবাব দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে নিনা প্লাস্টিক সার্জারির বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি এর বিরোধিতা করলেও মানুষকে তার ব্যক্তিগত পছন্দ করার অধিকার দিতে হবে। মেধা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলিউডের একটি ফিউশন ড্যান্স উপস্থাপন করেন। নিনাকে এর আগে মিস নিউ ইয়র্ক ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পর পরই তিনি ফিরে যান লস অ্যাঞ্জেলেসে। সেখানে তিনি তার কোরিওগ্রাফার নাকুল দেব মহাজনের সঙ্গে সে ইউ থিংক ইউ ক্যান ড্যান্স টেলিভিশন শোয়ের জন্য কাজ করতে থাকেন। গত ১৫ বছর ধরে নিনা ভারতীয় নাচের প্রশিক্ষণ নেন। নিজের ওজন বেড়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। মিস নিউ ইয়র্ক নির্বাচিত হওয়ার আগে তাকে কমাতে হয়েছে ৬০ পাউন্ড ওজন। তার জন্ম নিউ ইয়র্কের সিরাকাসে। সেখান থেকে ৪ বছর বয়সে তারা চলে যান ওকলাহোমায়। বয়স যখন ১০ বছর তখন তারা পাড়ি জমান মিশিগানে। এখন থেকে ৬ বছর আগে তার পরিবার চলে যায় ফেয়েটিভিলে। সেখানে সেইন্ট জোসেফস হাসপাতালে তার পিতা গাইনির চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। তার পরিবার হিন্দু। নিনা নতুন মিস আমেরিকা নির্বাচিত হওয়ায় চার দিকে যখন সরব আলোচনা তখন টুইটারে তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে প্রচারণা। টুইট বার্তায় বলা হচ্ছে, তিনি আমেরিকান নন। অন্যরা বলছে, তিনি আরবের নাগরিক। তাকে দেখা যায় সন্ত্রাসীর মতো। ডালাস রোবিনসন৮ টুইটারে লিখেছে- একজন আরব জিতেছে এতে আমি একেবারে পাগল হয়ে গেলাম। জ্যাকঅ্যামিক৫ লিখেছে, কিভাবে একজন বিদেশী মিস আমেরিকা নির্বাচিত হয়? সে তো একজন আরব # ইডিয়টস। ইমি-আদকিনস লিখেছে, একেই বলে মিস আমেরিকা। নিউ ইয়র্ক থেকে বেরিয়ে যাও। তোমাকে সন্ত্রাসীর মতো দেখা যায়। আরেক টুইটার বার্তায় বলা হয়েছে, ভালই তো। তারা এবার মিস আমেরিকা হিসেবে একজন মুসলমানকে বেছে নিয়েছে। এতে ওবামার খুশি হওয়া উচিত। হয়তো তার একটা ভোট আছে। তবে নিনার পক্ষেও অনেকে টুইট করেছেন। একটি বার্তায় বলা হয়েছে, লোকজন সামপ্রদায়িক মন্তব্য করছে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা নতুন মিস আমেরিকা পেয়েছি। অক্ষয় নামে আরেকজন লিখেছে, একটি দেশ সামপ্রদায়িকতায় ভরা। সেই দেশটি হলো আমেরিকা।