আত্মহত্যার চেষ্টা ঐশীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাজীপুরের কোনাবাড়ি কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকার সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ঐশী রহমান। তবে অন্য মেয়েরা দেখে ফেলায় তার প্রাণ রক্ষা হয়। এতদিন বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিলেন কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। শেষ পর্যন্ত খবরটি ফাঁস হয়ে পড়ে। গত শনিবার সন্ধ্যায় ঐশীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে স্থানান্তরের পরই আত্মহত্যার গোপন তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ে। গত ২৪শে আগস্ট থেকে ৩০শে আগস্ট পর্যন্ত ওই উন্নয়ন কেন্দ্রে ছিল ঐশী। এ বিষয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন বলেন, মহিলা কারাগারে ঐশীকে বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে। কারণ কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকাকালে ঐশী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তাই এখানে যাতে একই ঘটনার সুযোগ না পায় সে বিষয়ে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাকে । তিনি আরও বলেন, তার এহেন আচরণ সংশোধনের জন্য ধর্মীয় অনুশাসনে চলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। নামাজ, কোরান পড়া ও ধর্মীয় বই পড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। ঐশী নিজের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। পিতামাতার জন্য দোয়াও করছে। আর ভাইকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছে সবার কাছে। কোনাবাড়ি কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক শংকর সরন সাহা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, সুমি এখানে আছে, সে ভাল আছে। স্বাভাবিকভাবে সবকিছু করছে। কারা সূত্র জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে ঐশীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নেয়া হয়। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার। ২০০ ধারণ ক্ষমতার এ কারাগারে বর্তমানে ২৩৯ জন নারী বন্দি ছাড়াও রয়েছে ১১ জন শিশু। তাদের জন্য এখানে আলাদা ডে-কেয়ার সেন্টার রয়েছে। শিশুদের প্রতিদিন ডিম, দুধ ও কলা দেয়া ছাড়াও আলাদা যতœ নেয়া হয়। এখানে তাদের পড়াশোনা করানোর জন্য শিক্ষক রয়েছেন। এখানে ১০ জন ফাঁসির ও ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ঘাতক কন্যা ঐশীর উপস্থিতিতে আগামী বৃহস্পতিবার জামিন আবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এরফান উল্লাহ এ দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে গৃহকর্মী সুমির জামিনের আবেদন করা হলে শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করা হয়। গত ২৪শে আগস্ট রাতে তাদের ঢাকা থেকে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। ২৯শে আগস্ট ঐশীর জন্মসনদ আদালতে দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু আল খায়ের ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান। এ সময় তারা ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান। পরে ওই আবেদনে প্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাত জন্মসনদ পত্র যাচাই করে ঐশীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শনিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৬ই আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের ভাড়া বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাহফুজ-স্বপ্না দম্পতির দু’সন্তানের মধ্যে বড় ঐশী রহমান আর ছোট ছেলে ঐহী। ঐশী ১৭ই আগস্ট পুলিশের কাছে ধরা দেয়। এরপর তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সাম্প্রতিক সংবাদ

আর্কাইব

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

প্রধান সম্পাদক : সাঈদুর রহমান রিমন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ নজরুল ইসলাম আজহার

সার্বিক যোগাযোগ : চৌধুরী মল (৫ম তলা), ৪৩ হাটখোলা রোড, ঢাকা-১২০৩॥

গাজীপুর অফিস : এ/১৩১ (ইকবাল কুটির) হাবিব উল্লাহ স্মরণী, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০॥

হটলাইন: ০১৭৫৭৫৫১১৪৪ ॥ সেলফোন : ০১৭১৬-৩৩৩০৯৬ ॥ E-mail: banglabhumibd@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত বাংলাভূমি ২০০৯-২০২৫