স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইসিসি’র দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট আকসু’র বিপিএলের ফিক্সিং নিয়ে তদন্ত করারই এখতিয়ার নেই। এমনকি তারা চার্জও দিতে পারে না- এমনটাই দাবি করেছেন ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের মালিক সেলিম চৌধুরী ও তার ছেলে সিহাব চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার নওরোজ এম আর চৌধুরী। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত দুই ক্রিকেটার মাহবুবুল আলম রবিন ও মোশাররফ রুবেলের আইনজীবী ব্যারিস্টার নূরউস সাদিকও একই দাবি করেছেন। এই চার অভিযুক্তের আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে তাদের বিপক্ষে আনা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেছেন। বিপিএল ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত ৯ জনের চারজন গতকাল বিসিবি’র সভাপতি ও ট্রাইবুন্যালের চেয়ারম্যান বরাবর নিজেদের আইনজীবীর মাধ্যমে এমন দাবি করে আকসু’র অভিযোগের বিপক্ষে আইনি লড়াই শুরু করেছেন। তবে অন্য পাঁচ অভিযুক্ত মো. আশরাফুল, মো. রফিক, কৌশল লোকুয়ারাচ্চি, স্টিভেন্স ও গহর রাওয়াত আইনি লড়াই করবেন কিনা তা গতকাল বিকাল পর্যন্ত জানা যায়নি। আশরাফুল ও মো. রফিকের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তারা আবেদন করেছেন কিনা জানা যায়নি। এমনকি বিদেশী তিনজনের বিষয়েও কিছু জানা যায়নি। এই বিষয়ে বিসিবি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই পুরো বিষয়টা আমাদের বিসিবি’র আইনজীবী ও ট্রাইব্যুনাল দেখছে। তাই এখনই আমরা কোন আপডেট দিতে পারছি না।’ গতকাল ছিল অভিযুক্ত ৯ জনের এই অভিযোগের বিপক্ষে আপিল করার শেষদিন।
গতকাল বিকালে করা আপিলে আকসু এই তদন্ত করতে পারে না বলে যে দাবি করা হয়েছে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সে প্রসঙ্গে নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিসিবি এখানে আকসুকে তদন্ত করতে বলেছে। আর বিসিবি’র অনুরোধেই আকসু এখানে তদন্ত কাজ করতে পারে। এতে বাধা থাকার কথা নেই। তবে আইনি কোন দিক থাকলে সেটা আমাদের আইনজীবীরাই ভাল বলতে পারবেন।’
সেলিম চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার নওরোজ বলেন, ‘এখানে বিসিবি’র এন্টিকরাপশন কোড অনুযায়ী তদন্তের জন্য একজন ব্যক্তিকে নিয়োগ করার কথা রয়েছে, কোন সংস্থাকে না। আর আকসু একটি সংস্থা ব্যক্তি নয়। এছাড়া তারা তদন্ত করতে পারলেও সরাসরি অভিযোগ পত্র দিতে পারে না। এই অভিযোগটা বিসিবি’র পক্ষ থেকে দিলে সঠিক হতো। তারা সরাসরি অভিযোগ পত্র দিতে পারে না।’
অন্যদিকে ক্রিকেটার রুবেল ও রবিনের আইনজীবী নূরউস সাদিক বিকালে আপিল করতে এসে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমার মক্কেল দুজন এই অভিযোগে বিষণ্ন। তারা দেশের উদীয়মান তারকা ক্রিকেটার। এই অভিযোগকে তারা ভালভাবে নিতে পারেনি। আমি এই দু’জনের পক্ষ থেকে দাবি করছি, তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ। আর তাদের ওপর আকসু যে অভিযোগগুলো এনেছে তারতো ভিত্তি নেই। শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে তারা এই ধরনের অভিযোগ করেছে বলেই আমরা দাবি করছি তারা এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে আবার খেলায় ফিরবে।’ সেই সঙ্গে এই আইনজীবী রবিন ও রুবেলকে যেন এই বিচার চলাকালীন খেলার অনুমতি দেয়া হয় সে আবেদন করবেন বলেও জানান। রবিন ও রুবেলের পক্ষে ব্যারিস্টার সাদিক বলেন, ‘অন্যান্য দেশে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে খেলার ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় না। কিন্তু আমাদের মক্কেলদের খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আমরা এই বিষয়েও আপিল করবো যেন তাদের খেলার সুযোগ দেয়া হয়।’ তবে আইনজীবীরা মামলার পরবর্তী পদক্ষেপের স্বার্থে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আকসু’র অভিযোগ গুলো কি তা প্রকাশ করতে রাজি হননি। তবে তারা অচিরেই তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন বলে উল্লেখ করেন।
আইনি লাড়াইয়ে নির্দোষ প্রমাণ হবে বলে দাবি করেছেন ঢাকার গ্ল্যাডিয়েটর্সের মলিক ও ক্রিকেটার রুবেল ও রবিন। তাদের ভাষায়, ‘যেহেতু এই অভিযোগ গুলোর কোন নির্দিষ্ট ভিত্তি নেই তাই আমরা আশা করি নির্দোষ হিসেবেই নিজেদের প্রমাণ করতে পারবো।’ এছাড়াও মো. আশরাফুল নিজ মুখে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করে নেয়ায় তার আইনি লড়াইটি হবে এখন শাস্তি যতটা কমানো যায় তা নিয়ে। তবে তিনি গতকাল আইনজীবীর মাধ্যমে সেই কাজটি শুরু করেছেন কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি।’