স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে আগামী ৩০ আগষ্ট আওয়ামী লীগ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক মহাসমাবেশ করবে। আর সেপ্টেম্বর থেকেই আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সারাদেশে ১০ দিনের এক নির্বাচনী সফরে বের হবেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভায় এ সিদ্ধাšত্ম নেয়া হয়েছে। গণভবনে রোববার রাতে ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা ট্রিবিউন
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অনেককেই জানিয়ে দিয়েছেন তারা আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। মাঠ পর্যায়ে বেশ কয়েকটি জরিপের ফলাফলে এসব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য পাওয়ায় এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সভায় প্রধানমন্ত্রী সাফ বলে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে জরিপের ওপর ভিত্তি করেই। এবং মনোনয়নপ্রার্থীদের এব্যাপারে সতর্ক করে দেন তিনি। একই সঙ্গে সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন আগামী নির্বাচনে ৫০ থেকে ৬০টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করবে তার দল।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলটির নেতা মোহাম্মদ নাসিম ধর্মনিরপে ও গণতন্ত্রমনা হিসেবে ড. কামাল হোসেন ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দলকে মহাজোটে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব দিলে অধিকাংশ নেতা এর বিরোধীতা করেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে সারাদেশে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখা ছাড়াও দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কলহ ও দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে মাঠ পর্যায়ে দলের প্রতি প্রকৃত সমর্থন যাচাই করা হবে। এজন্যে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ১৬ টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলের সভানেত্রী প্রতিটি কমিটির প্রধানকে ১০ দিনের ওই সফর শেষে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিটি বিভাগ থেকে নিয়মিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আগামী সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে কোনো আপোষ না করার দৃঢ় ইচ্ছা ব্যক্ত করেন দলের সিনিয়র নেতারা। শেখ হাসিনা দলের সিনিয়র নেতাদের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ত্যাগী ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে পোলিং এজেন্ট হিসেবে প্রশিণ দেয়ার নির্দেশ দেন।
আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম সারের দাম কমানোর প্রস্তাব দিলে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী তা নাকচ করে দেন। কৃষিমন্ত্রী জানান, সারের দাম এর আগে বেশ কয়েকবার কমানো ও কৃষি খাতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজনে ইউরিয়া সারের মূল্য কমানো যায় কী না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলের চট্টগ্রাম উত্তর, কুমিল্লা শহর ও উত্তর কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা কমিটিকে দুই ভাগে ভাগ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কার্যনির্বাহী কমিটি বিমান চলাচলমন্ত্রী ফারুক খানকে দলের পররাষ্ট্র বিষয়ক সচিব নির্বাচিত করেছে।
কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় শেখ হাসিনা দলের নেতাদের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ভোটারদের কাছে তুলে ধরার তাগিদ দেন। এছাড়া বিলবোর্ডে প্রচারনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ২০০১-০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত প্রচারণার কথা বলেন দলের সভানেত্রী।
কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলের নেতা কর্মীদের বিভিন্ন ইস্যুতে একই ধরণের বক্তব্য রাখার পরামর্শ দেন। এ ব্যাপারে তিনি শেখ হাসিনার বক্তব্যকে বিবেচনা করার কথা বলেন। বিশেষ করে মিডিয়ার সামনে কথা বলার সময় তা যেন বিতর্কের সৃষ্টি না করে সে ব্যাপারে সজাগ থাকার কথা বলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।