স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাংগঠনিক জেলার পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যেসব সাংগঠনিক জেলার ১০টির বেশি উপজেলা রয়েছে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে দুইভাগে ভাগ করা হবে।
একইসঙ্গে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে সাংগঠনিক সফরে বের হওয়া, কেন্দ্রীয় কমিটিতে একজন নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত, একজনের পদ রদবদলের সিদ্ধান্তও নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
রোববার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে ১৪ দলের পরিধি বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া আগামী নির্বাচনে দলটির ৫০ থেকে ১০০টি মনোনয়ন পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, আব্দুর রহমান, মতিউর রহমান, মিসবাউদ্দিন সিরাজ প্রমুখ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, কার্যকরী কমিটির সদস্য অধক্ষ্য মতিউর রহমান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের পরিধি বাড়ানোর জন্য দলীয় সভানেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য দেন। তখন শেখ হাসিনা ঐ জেলা দুই ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব দিলে সবাই সমর্থন করেন। পরে ঐ জেলা উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এসময় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট জেলা ভাগ করার প্রস্তাব করলে এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য বড় জেলা যেগুলোর ১০টির বেশি উপজেলা রয়েছে সেগুলোও পর্যায়ক্রমে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে শেখ হাসিনা সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কামালকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত এবং শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক কর্ণেল (অব.) ফারুক খানকে আন্তর্জাতিক সম্পাদক করার প্রস্তাব দিলে অন্যান্যরা সমর্থন দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচনে ৫০-৬০ জনের মনোনয়ন পরিবর্তন করে অন্য প্রার্থী দেয়া হবে। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এই তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরাও রয়েছেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে মোহাম্মদ নাসিম সারের দাম কমানোর প্রস্তাব দেন। তাকে সমর্থন দেন দলের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সারের বর্তমান দামের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলেও সভা দাম কমানোর প্রস্তাবের পক্ষেই সায় দেয়।
বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অন্তবর্তী সরকারের অধীনে এবং শেখ হাসিনাকে সরকার প্রধান রেখেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে দলের দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে দেন। সবাই তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন।
সভায় সেপ্টেম্বরের এক তারিখ থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনের নেতারা তৃণমূল সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশও দেয়া হয়।
এছাড়া তৃণমূল নেতাদের ভেদাভেদ ও দূরত্ব ভুলে আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করতে বলা হয়। বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকেরও আরো সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।
এছাড়াও ১৪ দলের মুখপত্র মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলের পরিধি বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। আগামী বৈঠকে এ নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।