বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী অপসারণের নির্দেশ দেয়া হলেও ৯৬ ঘন্টায়ও রাজধানী থেকে সরানো হয়নি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে প্রচারণার ব্যানার ও পোস্টার। তাই ইসির দেওয়া নির্বাচনী আচরণ বিধিকত খানি মানবে দলটি তানিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখাদিয়েছে। তবে ইসি বলছে ভিন্নকথা; দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সহায়তায় (ডিসিসি) এসব উপকরণ সরানো হবে। আর এর খরচ সংশ্লিষ্ট প্রার্থী ও দলকে দিতে হবে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ও দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে সরকারের পক্ষে প্রচারণার ব্যানার ও পোস্টার। এছাড়া নৌকায় ভোট প্রার্থনা-সংবলিত এসব পোস্টার রোববারও দেখা গেছে। কোথাও কোথাও বিজ্ঞাপনী সংস্থার ভাড়া করা বিলবোর্ডেও এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারি দলের পক্ষেই। তবে অল্প কিছু পোস্টার দেখা গেছে জাতীয় পার্টি, বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী চূড়ান্ত হলে দল ও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো যাবে। কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের অনেক আগ থেকে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ইসির পক্ষ থেকে ৪৮ ঘন্টার দেয়া সময় পার হলেও এখনও পোস্টার ও বিলবোর্ড রাজধানীতে দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে ইসির কঠোর হওয়া উচিত। কেননা সকল দলই ইসির কাছে সমান।
রাজধানীর জিপিও, তাতীবাজর, সদরঘাট, আবদুল গণি রোড, ধানমন্ডি, বিজয় সরণি, মিরপুর, মহাখালী, বনানীসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করে বিলবোর্ড, ব্যানার ও পোস্টার রোববার দেখা গেছে। সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মোড়ে মোড়ে টাঙানো বিলবোর্ডও আগের মতোই আছে। গুলিস্তান, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, আগারগাঁও থেকে পল্লবী, মতিঝিল, গুলশান, উত্তরা, খিলক্ষেতসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নৌকা ও আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের প্রচারণা দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, যারা নির্দিষ্ট সমযের মধ্যে প্রচার-উপকরণ সরায়নি এগুলো ইসির পক্ষ থেকে সরানো হবে। এর খরচ সকল প্রার্থীকে দিতে হবে। তিনি বলেন, যে সব দল ও প্রার্থীরা পোস্টার, বিলবোর্ডসহ বিভিন্ন উপকরণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরায়নি তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। যদি সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারে তাহলে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাচনী আচরণবিধির ১২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করিতে পারিবেন না।’
তফসিল অনুযায়ী, ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ। সেই হিসাবে তার ২১ দিন আগে অর্থাৎ ( ১৪ ডিসেম্বরের) আগে প্রচারণা চালানো যাবে না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বেশ আগে থেকেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ২৫ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার করে ইসি। এরপর গত ২৬ নভেম্বর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থীদের আগাম প্রচারণামূলক সব ধরনের পোস্টার-বিলবোর্ড ও অন্যান্য প্রচারসামগ্রী অপসারণের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণামূলক বিলবোর্ড বা পোস্টার না সরালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ৯৬ ঘণ্টা পরও শাসক দল আওয়ামী লীগ এগুলো সরায়নি। ইসিও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।