শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > ৯০ শতাংশ গার্মেন্টসে নেই ডে-কেয়ার সেন্টার

৯০ শতাংশ গার্মেন্টসে নেই ডে-কেয়ার সেন্টার

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: শ্রম আইনে ডে-কেয়ার সেন্টার বাধ্যতামূলক করা হলেও ৯০ শতাংশ গার্মেন্টসেই ডে-কেয়ার সেন্টার নেই। যাও কিছু আছে তা কেবলই সাইনবোর্ড সর্বস্ব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বর্তমানে সচল গার্মেন্টসগুলোর ৯০ শতাংশেরই ডে-কেয়ার সেন্টার নেই। শ্রম আইন অনুসারে যে প্রতিষ্ঠানে ২০ জন নারী শ্রমিক আছেন, সেখানে ডে-কেয়ার সেন্টার না থাকা দণ্ডনীয় অপরাধ। যাও বা কিছু গার্মেন্টসে ডে-কেয়ার সেন্টার আছে তা কেবলই সাইনবোর্ড সর্বস্ব। নামকা ওয়াস্তে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার রাখা দরকার তাই রেখেছে।

সূত্র জানায়, ৯০ শতাংশ গার্মেন্টসে কোনো ডে-কেয়ার সেন্টারই নেই আর ৮ শতাংশ কারখানা নামকাওয়াস্তে একটি ডে-কেয়ার সেন্টারের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে। তবে ২ শতাংশ গার্মেন্টসে যেসব ডে-কেয়ার সেন্টার আছে সেগুলোর কার্যক্রমও সন্তোষজনক।

পোশাক শিল্পে ৭০ শতাংশের বেশি নারী শ্রমিক। ফলে বাচ্চাদের বাসায় একা রেখে কাজ করতে এসে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।
আরএকে নিটওয়্যারের শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘সেই সকালে কারখানায় আহি। বাচ্চাটার বয়স মাত্র এক বছর। মাঝে মাঝে মা থাকলে চিন্তা থাকে না। আর নয়তো হাতের মুঠে জান লইয়া কাম করি। কী করমু, আমাগোতো আর ট্যাকা পয়সা নাই যে বুয়া রাখুম। পাশের ঘরের একজনের কাছে রাইখা আসি। কিন্তু শান্তি পাই না’।

আরএকে নিটওয়্যার, সিনসিয়ার গার্মেন্টস, এসিসিএল নিটওয়্যারসহ আরো অনেক কারখানায়ই সরেজমিনে গিয়ে সেগুলোতে কোনো ডে-কেয়ার সেন্টারের দেখা মেলেনি।

অন্যদিকে অনেক গার্মেন্টসে নামকা ওয়াস্তে ডে-কেয়ার সেন্টার রাখা হয়েছে। বিজিএমইএ’র সাবেক দ্বিতীয় সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের গার্মেন্টস বান্দো’র মোট শ্রমিক প্রায় ২২শ’ জন। তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী। সে হিসাবে প্রায় ১২শ’ নারী শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন বান্দোতে। অথচ ১২শ’ নারী শ্রমিকের বিপরীতে কারখানার ডে-কেয়ার সেন্টারে বাচ্চা লালন-পালন ক্ষমতা আছে মাত্র ৮ জন। এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন কারখানাটির প্রশাসন বিভাগের ম্যানেজার আরিফুর রশিদ।

টেক্সাইল গার্মেণ্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বাংলানিউজকে বলেন, আজ যে শ্রমিক, তাদের সন্তানরাই কিন্তু পরবর্তী দিনে এ শিল্পের ধারক-বাহক হবে। কিন্তু কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার না থাকার ফলে বাচ্চাদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বুকের দুধ পর্যন্ত দিতে পারেন না নারী শ্রমিকরা। ফলে জন্মের পর থেকেই অপুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকে পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের সন্তানরা।

এদিকে ডে-কেয়ার সেন্টার নিয়ে একের পর এক টালবাহানা করেন মালিকপক্ষ। তবে এ অভিযোগকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) এর সহ সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজীম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এখন সব কারখানতেই ডে-কেয়ার সেন্টার আছে। এবং তাদের কার্যক্রম ও যথাযথভাবেই চলছে। কমপ্লায়েন্সের একটি বড় শর্তই ডে-কেয়ার সেন্টার। তাই এটি না থাকার কোনো কারণ নেই। সাব-কন্ট্রাক্টিং কারখানাগুলোর কি অবস্থা সে বিষয়ে আমি অবগত নই।

তাজরীনের অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের পর পরই গার্মেন্টস কারখানার কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল সজাগ হয়ে ওঠে। আর তখনই কারখানর কমপ্লায়েন্স রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন কারখানা মালিকরা। আর তাই নামকাওয়াস্তে অনেকে স্থাপন করেন ডে-কেয়ার সেন্টার, যার বাস্তবে তেমন কোনো কার্যক্রমই পরিলক্ষিত হয় না। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম