শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > ৭ খুন মামলার রায় > রায় কার্যকর দেখে মরতে চাই : নজরুলের শ্বশুর

৭ খুন মামলার রায় > রায় কার্যকর দেখে মরতে চাই : নজরুলের শ্বশুর

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের মামলায় ২৬ আসামির মৃত্যুদন্ডাদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। এ সময় তিনি মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রায় দ্রুত কার্যকরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজ (সোমবার) ৭ খুন মামলার রায়ে ২৬ আসামিকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরপরই আদালত পাড়ায় শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

রায় ঘোষণার ১০ মিনিট আগে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে হাজির হন। রায় ঘোষণার সময় কাঁদতে থাকেন নজরুলের শাশুড়ি জ্যোৎস্না বেগম। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, এই আসামিরা তাঁর মেয়ের সংসার তছনছ করেছে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা এ রায়ে খুশি। এ রায়ে যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়, এ জন্য সরকারে কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

শহীদুল ইসলাম বলেন, এরা (মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত) মানুষ না। এরা পশু, এরা বহু সংসার ধ্বংস করেছে। আদালত রায় দিয়েছে। আদালত উপযুক্ত বিচার করেছে। এখন রায় কার্যকর হলে মনের দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হবে। রায় কার্যকর দেখে মরতে চান তিনি।

আজ রায় ঘোষণার সময় মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন র‌্যাবের সদস্য। মামলার শুরু থেকেই র‌্যাবের সাবেক ৮ সদস্যসহ ১২ আসামি পলাতক।

সাত খুনের মামলায় মোট ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তাঁরা হলেন চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। কারাগারে থাকা বাকি আসামিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তাঁর সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার ও মোর্তুজা জামান (চার্চিল)।

পলাতক আসামিরা হলেন করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান এবং নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।

ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ। প্রথম আলো